হোম > ছাপা সংস্করণ

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি তিনি

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

মহান বিজয়ের ৫০ বছরেও স্বীকৃতি পাননি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ডা. তারাকান্ত ভৌমিক। পরিবারের চাওয়া, ডা. তারাকান্তকে যেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দেয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে, প্রমাণসহ আবেদন করলে তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাবেন।

ডা. তারাকান্ত ভৌমিক মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করতেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি রাজাকারদের মাধ্যমে জানতে পারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হানাদার বাহিনী তাঁকে উপজেলার ভিতরবন্দের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ওই দিনই ভিতরবন্দ থেকে তাঁর শ্যালক সুকেশ চন্দ্র ঘোষ ও অজ্ঞাত আরও একজনকে ধরে নিয়ে যায় হানাদাররা। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার কারণে থানায় আটকে রাখা হয়। পরদিন তাঁকেসহ ৩৬ জনকে নাগেশ্বরী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের পাশে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখে হানাদাররা। দেশ স্বাধীন হলে ওই স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়, কিন্তু তাঁকে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেও তাঁকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী পৌরসভার বদিজামাপুর কানিপাড়া গ্রামের শাহজাহান আলী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট তাঁকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যায় হানাদার বাহিনী। সেখানে আমার মতো আরও ৮-১০ জন ছিল। শেষ বিকেলের দিকে নাগেশ্বরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা ব্যক্তিদের পুকুরের উত্তর-পূর্ব পাড়ে ঈদগাহ মাঠের পাশে দুই সারিতে দাঁড় করানো হয়। আমাদের সামনেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আতাউল্যাহ খান হত্যার নির্দেশ দেন । আমরা দুটি গর্ত খুঁড়ি। একটি গর্তে ৩৩ জন মুসলমান আর অন্য একটিতে তিনজন হিন্দু ব্যক্তির লাশ মাটিচাপা দেয়। সেদিনের কথা মনে হলে আজও গা শিউরে ওঠে।’

ডা. তারাকান্তর ছেলে প্রভাত ভৌমিক বলেন, ‘আমার বাবা জীবনের মায়া ত্যাগ না করে দেশে আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেন। এ কারণে হানাদাররা তাঁকে হত্যা করেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে। বিজয়ের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার ঘুরেও কোনো ফল পাইনি। আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। মৃত্যুর আগে শুধু জেনে যেতে চাই, বাবাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ উদ্যোগ ‘শেকড়’-এর সহকারী অধ্যাপক সভাপতি মনোয়ার হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘সেদিন নাগেশ্বরীতে হানাদার বাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নিহত হন ডা. তারাকান্ত। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতির দাবি জানাই।’

নাগেশ্বরী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মতিউর রহমান নান্টু বলেন, ‘তারাকান্ত ভৌমিক মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দিতেন। তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। তবে তাঁর নাম শহীদের তালিকায় নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাছুম বলেন, ‘শহীদ বা মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। সেখানে যৌক্তিক প্রমাণসহ আবেদন করলে তারাকান্ত ভৌমিক শহীদের মর্যাদা পেয়ে যাবেন আশা করছি।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন