দাকোপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঝর্ণা রায় নামের এক সেবিকার (নার্স) বিরুদ্ধে রোগী ও তাঁর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের জানান, ওই সেবিকার দুর্ব্যবহার চরমে পৌঁছেছে। তাঁর বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা কিছু রোগী জানান, গত মঙ্গলবার উপজেলার পশ্চিম বাজুয়া এলাকার তপন ঘোরামীর স্ত্রী রিতা ঘোরামীকে গর্ভবতী অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর সিজার করা হয়। পরবর্তীতে রিতার প্রচণ্ড কাশি অনুভব হলে তাঁর সঙ্গে থাকা মা বিমলা মণ্ডল কর্তব্যরত সেবিকাদের বিষয়টি জানান। সেবিকাদের কাছে কাছে বারবার সাহায্য চাওয়ায় সেবিকা ঝর্ণা রায় রাগান্বিত হয়ে বিমলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ঝর্ণার দুর্ব্যবহারে ও মেয়ের কাশিজনিত কষ্ট দেখে বৃদ্ধ বিমলা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময়ে আশপাশের বেডের অন্যান্য রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা বিমলাকে সান্ত্বনা দেন।
গতকাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাধিকা বিশ্বাসসহ রিতার আশপাশের একাধিক রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা ওই সেবিকার দুর্ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।
বৃদ্ধ বিমলা মণ্ডল বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের কাশির বিষয় নিয়ে একাধিকবার সাহায্য চাইতে গেলে সেবিকা ঝর্ণা রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘মেয়ের গলায় লাঠি দিয়ে ভালো করে গুঁতিয়ে দিলে কাশি ভালো হয়ে যাবে।’
অভিযুক্ত সেবিকা ঝর্ণা রায়ের কাছে বিষয়ের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোগীদের সেবা করা আমাদের কাজ। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য স্বপন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘সেবিকা ঝর্ণা তাঁর ভুল স্বীকার করে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) মোজাম্মেল হক নিজামী বলেন, ‘প্রত্যেক রোগীর প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হলে যত্নসহকারে সেবা দেওয়া হয়। তারপরও যদি কোনো সেবিকা রোগী ও তাঁর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে থাকেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’