আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন টালিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পশ্চিমবঙ্গের শ্যামবাজারে তাঁকে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কোনোক্রমে গাড়িতে উঠে এলাকা ছাড়েন অভিনেত্রী। প্রতিবাদকারীদের এমন ব্যবহারে কষ্ট পেলেও প্রতিবাদ থামাবেন না বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা।
গত বুধবার রাতে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে রাত ৯টার দিকে উপস্থিত হন ঋতুপর্ণা। গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে উদ্দেশ করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। তারপরও তিনি প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা পেরিয়েই মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দ্রুত অভিনেত্রীকে গাড়িতে তোলা হয়। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। অভিনেত্রীর গাড়ি ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। এমনকি তাঁর গাড়িকে লক্ষ্য করে বোতল ছোড়া হয়, ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, ‘আমি একজন অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে, একজন নারী হিসেবে অন্য নারীর পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলাম। আচমকাই একটা জনস্রোত ধাক্কা দিতে শুরু করল। এত চিৎকার হচ্ছিল যে কারও কোনো কথা শুনতে পাচ্ছিলাম না। যেখানে ঘটনাটা ঘটল, সেখানে নিহত চিকিৎসকের মা-বাবাও এসেছিলেন। ভেবেছিলাম, একবার দেখা করব ওদের সঙ্গে। বলতাম, ওদের লড়াইয়ের সঙ্গে আমিও রয়েছি। কিন্তু তা হলো কই? তবে এই ঘটনার পর আমি থেমে যাব, এমন নয়। আমার মনের মধ্যে প্রতিবাদ থাকবে। আমিও একইভাবে সুবিচার চাইব। সেটা থামবে না।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘বুঝতে পারছি, সকলেই ক্ষুব্ধ। তবে, কলকাতার প্রতিবাদী চেহারার মধ্যে এই চেহারাটা দেখে আমি লজ্জিত, আহত, কম্পিত। আমার প্রাণটাও চলে যেতে পারত ওই রাতে। বুঝতে পারলাম না কেন এই আক্রোশ। আমি তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নই। ওই ভিড়ের মাঝে চটিচাটা বলে সম্বোধন করা হয়েছে আমাকে। এমন অসভ্যতা! আসলে যাঁরা এটা করলেন, তাঁদের মুখ্য উদ্দেশ্য আন্দোলন করা নয়। এমন নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটল, এখনো ঘোর কাটছে না আমার।’
এর আগেও আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ঋতুপর্ণা। গত ১৫ আগস্ট সকালে একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন টালিউডের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। যেখানে শঙ্খ (শাঁখ) বাজিয়ে আর জি কর ধর্ষণ-কাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন তিনি। তবে সেই ভিডিও নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের শিকার হন তিনি। বিতর্ক এড়াতে শেষ পর্যন্ত সেই ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেন ঋতুপর্ণা।