মোয়াজ্জেম হোসেন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
পশ্চিম সীমারেখায় সাগরের পানিতে ডুবে যাচ্ছে টকটকে লাল সূর্য। আর আপনি গরম কাপড় গায়ে বিশাল ছাতার তলায় কাঠের চেয়ারে আধশোয়া হয়ে মনের সুখে খাচ্ছেন সামুদ্রিক কোনো মাছ ভাজা। সাগর সৈকতে গেলে, বিশেষ করে কুয়াকাটায় গেলে এখন এমন দৃশ্য হামেশা চোখে পড়বে যে কারও।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের রাতের আকর্ষণ এখন ফিশ ফ্রাই মার্কেট। এখানে এসে সারা দিন ঘোরাফেরা শেষে সন্ধ্যার পর সৈকতে নেমে যান প্রশান্তির খোঁজে। সৈকতের জিরোপয়েন্ট থেকে পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে দেখতে পাবেন সারি সারি দোকান। দেখে মনে হবে, এ যেন সামুদ্রিক মাছের বাজার। এখান থেকে পছন্দমতো মাছ কিনে ভেজে নিতে পারবেন। এ ছাড়া কুয়াকাটার সিকদার রিসোর্ট, গ্রেভার ইন, সি-ক্রাউন, ইলিশ পার্কসহ কয়েকটি আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টেও পাওয়া যাবে ফিশ ফ্রাই।
সন্ধ্যার পর সৈকতের দোকানগুলোতে সাজানো থাকে টুনা, কোরাল, পোয়া, লইট্টা, বগনি, মাইট্যা, তাইড়্যা, ভোল, রূপসা, লাক্কা, রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ ছাড়া পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির জেলিফিশ, শাপলাপাতা, অক্টোপাস, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং নাম না-জানা বৈচিত্র্যময় সামুদ্রিক প্রাণী। এসব থেকে পছন্দের মাছটি কিনে দিলে দোকানিরা আপনার পছন্দমতো ফ্রাই অথবা বারবিকিউ করে দেবেন। সঙ্গে পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সস, সালাদ, কোমল পানীয় এমনকি গরম পরোটা।
পায়রা সেতু খুলে দেওয়ায় এই শীত মৌসুমে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে কুয়াকাটায়। ফলে ফিশ ফ্রাই মার্কেটে বেড়েছে ভিড়। দোকানি জানালেন, পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের মাছের সংগ্রহ বাড়াতে হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের দাম একটু বেশি বলে ক্রেতাদের কাছেও বেশি দাম নিতে হচ্ছে।
কুয়াকাটা ইলিশ পার্কের স্বত্বাধিকারী রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, মৌসুমের শুরুতে পর্যটকের সংখ্যা দেখে তাঁরা আনন্দিত।পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী হরেক রকমের ফিশ ফ্রাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান রুমান। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সদস্য আবুল হোসেন রাজু জানান, এখানে প্রায় ৫০টির বেশি দোকান আছে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সময় কাটানো যাবে ফিশ ফ্রাই মার্কেটে। পাওয়া যাবে তাজা মাছ।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং খাবারের মান অক্ষুণ্ন রাখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।’
দরদাম
ফ্রাই মার্কেটের দোকানি জামাল হোসেন জানান, এখানে প্রতিটি চিংড়ি ৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঁকড়া ৫০ থেকে ১৫০, রূপসা ১০০ থেকে ৫০০, রূপচাঁদা ১০০ থেকে ৫০০, স্যামন ৩০০ থেকে ৫০০, কোরাল ৫০০ থেকে ২ হাজার, লাক্কা ৫০০ থেকে ৭০০, লইট্টা ৩০ থেকে ৫০, ইলিশ ১০০ থেকে ৫০০, টুনা ২০০ থেকে ১ হাজার, অক্টোপাস ২০০ থেকে ৫০০, স্কুইড ৫০ থেকে ৫০০, বাঁশপাতা ১০০ থেকে ২০০, শাপলাপাতা ৫০ থেকে ১০০, সামুদ্রিক রুই ২০০ থেকে ৫০০, খটটা ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।