আওয়ামী লীগের নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডে পুলিশ এখন সুমন শিকদার ওরফে মুসাকে মূল ব্যক্তি বলে মনে করছে। তারা বলছে, মুসাকে পাওয়া গেলেই এ ঘটনার আসল রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে। শুটার দাবি করে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার মাসুম মোহাম্মাদ আকাশের মুখে মুসার নাম শোনার পর থেকে তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সন্দেহের শীর্ষে থাকা মুসা এ হত্যাকাণ্ডের পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। প্রযুক্তির ব্যবহার করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার পরের দিন দেশের পশ্চিম সীমান্তবর্তী এক জেলায় মুসার অবস্থান শনাক্ত করেন।
কিন্তু তারপর আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে মুসা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য সেসব সীমান্ত এলাকাতে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, টিপু হত্যায় মাসুমের পর আর কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম বেশ কিছু তথ্য ও ব্যক্তির নাম বলেছেন। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি এ সময় বাসায় ফিরছিলেন। তাঁর গাড়ি যানজটে পড়ার পর মোটরসাইকেলে করে আসা হেলমেট পরা এক যুবক টিপুকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। তাঁর এলোপাতাড়ি গুলিতে রিকশা আরোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনার দুই দিন পর পুলিশ মাসুম মোহাম্মাদ আকাশ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ দাবি করে, তিনি গুলি ছুড়ে টিপু ও সামিয়াকে খুন করেছেন। মাসুম মূলত একজন ভাড়াটে খুনি। ওই ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ বলছে, এই সুমন শিকদার মুসাই গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম মোহাম্মাদ ওরফে আকাশকে টিপু খুনের চুক্তি দিয়েছিলেন। যার পেছনে ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যুবলীগের কর্মী রিজভী হাসান ওরফে বোঁচা বাবু হত্যা মামলার আসামিদের সঙ্গে বাদীর সমঝোতা করতে টিপুর সাহায্য না করা। বোঁচা বাবুকে ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মতিঝিল এজিবি কলোনিতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ মামলার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, তাঁর সহযোগী নাসির উদ্দিন, সাগর, সালেহ ও মুসা আসামি ছিলেন।