পরিচয় অনেক দিনের। প্রণয় ঘটেছে এক দশক পেরোনোর পর। মাঝের দীর্ঘ সময় কেটেছে ভালো লাগা আর ভালোবাসায়। দুজনকে এক বিন্দুতে মিলিয়েছে অগাধ বিশ্বাস আর বোঝাপড়া। এসব কিছুর চূড়ান্ত পরিণতি হয়েছে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। গাঁটছড়া বেঁধেছেন শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকি ও শাফারিয়া আক্তার।
এই ক্রীড়া দম্পতির মন দেওয়া-নেওয়া ২০১৭ থেকে; প্রথম দেখার অর্ধযুগ পর। দুজনই উঠে এসেছেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে। এরপর বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশন ক্যাম্পে তাঁদের কাছে আসার গল্পের শুরু। একসঙ্গে চলাফেরা, ওঠা-বসা করতে করতে কখন যে শাফারিয়ার প্রেমে পড়েছেন বুঝেই উঠতে পারেননি বাকি!
এমনিতে শান্ত ও চাপা স্বভাবের বাকি। ঠিক বিপরীত শাফারিয়া—ভীষণ চঞ্চল এবং চটপটে। দীর্ঘ সময় খুব কাছ থেকে প্রিয় মানুষটিকে দেখার পরও প্রেমের ডাকে দ্রুত সাড়া দেননি। সময় নিয়েছেন পুরো তিন মাস। এরপর বাড়িয়ে দিয়েছেন দুই হাত। বিদায়ী বছরের অন্তিম প্রহরে চার হাত এক করে দিয়েছে দুই পরিবার। ধুমধাম করেই স্বপ্নযাত্রা শুরু হয় তাঁদের।
কিন্তু বিয়ের আড়াই মাস পার হলেও সংসার পাততে পারেননি বাকি-শাফারিয়া দম্পতি। আলাদা থাকছেন দুজনই। ৩২ বছর বয়সী বাকি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে থাকছেন; তাঁর স্ত্রী মোহাম্মদপুরের একটি বাসায়। এই ‘দূরত্ব’টা দ্রুত ঘোচাতে তাঁর কর্মসংস্থা নৌবাহিনীর কাছে বাসা চেয়ে বাকি যে আবেদন করেছেন, তা এখন প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই এটার সুরহা না হলে দুই-এক মাসের মধ্যেই বাসা ভাড়া নেওয়ার পরিকল্পনা তাঁদের।
বাকি-শাফারিয়া দুজনই বিকেএসপির শিক্ষার্থী ছিলেন; সেখান থেকেই স্নাতক পাস করেছেন তাঁরা। বাকি স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পড়াশোনা শেষের অপেক্ষায় থাকা শাফারিয়া মনোযোগ হারিয়েছেন শুটিং থেকেও। গত বছর বাংলাদেশ গেমসে অংশ নেওয়ার পর থেকেই হয়ে পড়েছেন অনিয়মিত।
মূলত নতুন জীবন শুরুর তাড়া থেকেই শুটিং থেকে ভাবনায় কিছুটা ছেদ পড়েছে। বাকি অবশ্য স্থির আছেন পেশাদারিতে। শুটিংয়ের মানুষ বাকি ব্যক্তিজীবনের নিশানাও মিস করেননি।
শাফারিয়ার মনের কোঠরে গিয়ে ঠিক আঘাত হানেন বাকি। আর শুটিংয়ে বড় কিছু না পাওয়ার আফসোস শাফারিয়ার দূর হয়েছে বাকির মনের খাঁচায় বন্দী হওয়ার সাফল্যেই। বিয়ের পর আজ দুজনের প্রথম ভালোবাসা দিবস। বিশেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে দুজনই এক হয়েছেন গতকাল রাতে। আজকের পত্রিকাকে দুজনই তাঁদের প্রেমের গল্পটা বললেন এভাবে—
বাকি: প্রথম দেখা ২০১১ সালে বিকেএসপিতে; শাফারিয়ার সঙ্গে প্রেমের শুরু ২০১৭ সাল থেকে। এরপর বিয়ে। কখন কীভাবে যে প্রেমে পড়েছি সেটা বুঝতেই পারিনি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
শাফারিয়া: ও খুব শান্ত। ভালো একজন মানুষ। খুব ভালো লাগত তাকে। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা দারুণ ছিল। বাকি যখন আমাকে (প্রেমের) প্রস্তাব দিল, তিন মাস ভেবেছি। আমরা দুজন অনেক সুখে আছি। অপেক্ষা করছি সংসার শুরু করার।