আজ ১৫ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও পূবাইল এলাকা। টানা চার দিন যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদারেরা মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সেই থেকে দিবসটি কালীগঞ্জ ও পূবাইল হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
কালীগঞ্জ থানার তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, গাজীপুর সদর উপজেলার পূবাইল ইউনিয়নের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুজ্জামান খসরু (৭২) বলেন, ‘টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত তখন একমাত্র রেলপথ ছাড়া যোগাযোগের আর কোনো মাধ্যম ছিল না। তাই পাকিস্তানি বাহিনী পূবাইল রেল স্টেশন ও তার আশপাশসহ পূর্ব দিকে কালীগঞ্জের সীমানা বালু নদীর ব্রিজ পর্যন্ত এলাকাজুড়ে তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে।’
বদরুজ্জামান খসরু বলেন, ১১ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় মিত্র বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় নরসিংদী থেকে রেলযোগে কালীগঞ্জে ঢুকতে শুরু করে। ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ওই স্থানের সরাসরি যুদ্ধ। ১৪ ডিসেম্বর কালীগঞ্জের বান্দাখোলা এলাকা থেকে একটি গ্রুপ আমার নেতৃত্বে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বে থাকা আলী হোসেন, খন্দকার মুঞ্জু, আজিজ, বাতেন মোল্লার গ্রুপ ও রূপগঞ্জের একটি দল ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে পূবাইলে অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়।
এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, একটানা ৪ দিন মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর মর্টার শেল ও তোপ কামানের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় পাকিস্তানি সেনাদের পূবাইল ঘাঁটি। এতে নিহত হয় প্রায় শতাধিক পাকিস্তানি সেনা। পরে ১৫ ডিসেম্বর তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।