হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
বর্ষার ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। আমন ধান রোপণের সময় প্রায় পেরিয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে ধান রোপণ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন নরসিংদীর রায়পুরায় ধানচাষিরা। অন্যদিকে বৃষ্টির অভাবে মৌসুমি সবজির খেতে সেচ দেওয়া নিয়েও চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানির অভাবে আমন রোপণ করতে দেরি হচ্ছে। আবার কেউ কেউ এখন পর্যন্ত জমি তৈরি করতে পারছেন না পানির জন্য। কোনো কোনো জমি তৈরি করে আমন রোপণ করলেও সেগুলো শুরুতেই পড়েছে খরার কবলে। কোনো কোনো জমিতে রোপণ করা ধানের চারা মরে যাচ্ছে। আবার কোনো জমি শুধু হালচাষ করে ফেলে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ মৌসুমের শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে খেতে সেচের পাশাপাশি ডিজেল, সার ও কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হবে। এ ছাড়া খেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে গেলে ফলন কমার বিষয়টিও কৃষকের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।
কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে হালচাষ তো দূরের কথা জমিতে ফাটল ধরেছে। এখন গভীর নলকূপের পানি দিয়ে জমি তৈরি করে আমন রোপণ করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে জমি তৈরিতে কাজ করছি। তেল ও সারের যে দাম, এতে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। পুঁজি ওঠানো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।’
পূর্ব হরিপুর গ্রামের কৃষক মো. ছালাম মিয়া বলেন, ‘দুই বিঘা জমি কোনোমতে তৈরি করে আমন ধান লাগিয়েছি। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। ঠিকমতো বিদ্যুৎও থাকে না। যার কারণে ধানখেতে খরা লেগেছে।’
কৃষক আবদুর রহমান বলেন, ‘ধান রোপণ করেছি এক সপ্তাহ হলো। লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। খেতের চারা মরতে শুরু করেছে। বৃষ্টির দেখা নেই অনেক দিন। এভাবে চলতে থাকলে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়ব।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ হাজার ৮০ জনকে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি কার্যালয় সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে।