কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের বল্লভদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর আগে রানিমুহুরী-বড়িইয়াকুড়ি সড়কের পাশে একটি জরাজীর্ণ ভবনে শিশুদের পাঠদান চলত। বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে জাতীয়করণ হয়। এর ৬ বছর পর ২০১৭ সালে পাশের বিলের মাঝখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি (পিইডিপি-৩) এর মাধ্যমে ৫ কক্ষের আধুনিক দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো সড়ক নেই। নিচু জমি ও পুকুরের পাড় হয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। প্রায় ৬ বছর ধরে চলছে এ ভোগান্তি।
দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির চারদিকে নিচু ফসলি জমি। বৃষ্টির পানিতে তাতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ে নেই বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। শ্রেণিকক্ষে বিদ্যুৎ না থাকায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশুরা। এতে পিছিয়ে পড়ছে তারা। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য খুঁটির ব্যবস্থা করা হলেও, জমির মালিকদের বাধার কারণে এত দিনেও সংযোগ নিতে পারেনি বিদ্যালয়টি। প্রচণ্ড গরমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে করে অনেক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার জানায়, ‘জমিতে কোমর পানি হলে বিদ্যালয়ে তেমন কেউ আসে না। কিছু ছাত্র মাথায় বই তুলে এলেও মেয়েরা আসতে চায় না। তখন স্যারেরা বাধ্য হয়ে স্কুল বন্ধ করে দেন। গরমেও আমাদের লেখাপড়া করতে কষ্ট হয়। আমরা বিদ্যালয়ে আসার জন্য একটি রাস্তা চাই।’
প্রধান শিক্ষক ছালমা আক্তার বলেন, এ বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক ও ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান সমস্যা রাস্তা ও বিদ্যুৎ না থাকা। বিলের মাঝখানে হওয়ায় বর্ষাকালে কোমর পানি ভেঙে ভিজে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। রাস্তা হলে ও বিদ্যুৎ সংযোগ পেলে অনেক ভালো হবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজিয়া খানম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক লিখিতভাবে আমাদের অবহিত করেছেন। সড়ক ও বিদ্যুতের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটি অনেকবার স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। গত উপজেলা মাসিক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষয়টির সমাধান করবেন।’
ইউএনও অভিষেক দাশ বলেন, ‘এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে বিস্তারিত বলতে হবে। যদি সড়ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’