মুন্সিগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নিহত বাবা ও দুই সন্তানের বাড়ি কিশোরগঞ্জের চলছে মাতম। পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে নিহত বাবা ও দুই শিশুসন্তানকে। নিহতদের স্বজনদের আহাজারি থামছে না। এদিকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত সন্তানদের মা শান্তা খানমও।
গত শনিবার সকালে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কাওসার খান (৩৭)। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তাঁর ছেলে ইয়াসিন খান (৬) ও মেয়ে ফাতেমা নোহরা খানম (৩)। নিহতদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বোয়ালিয়া এলাকায়।
শনিবার সন্ধ্যায় কাওসার খানের গ্রামের বাড়ি সদরের বোয়ালিয়া এলাকায় তাঁর মরদেহ আনা হলে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। আগের দিন আনা হয় তাঁর দুই সন্তানের মরদেহ। বোয়ালিয়া এলাকার খানবাড়ি গোরস্থানে তিনজনকে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে।
নিহত কাওসারের স্বজনেরা জানান, মুন্সিগঞ্জে আবুল খায়ের গ্রুপে সামান্য বেতনে চাকরি করতেন কাওসার খান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতেন মুক্তারপুর এলাকায় একটি ভবনের দোতলায়। গত বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে চর মুক্তারপুরের শাহ সিমেন্ট রোডে জয়নাল মিয়ার চারতলা ভবনের দোতলায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কাওসারের পরিবারের চারজনসহ পাঁচজন ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হন।
এ ঘটনায় দগ্ধ কাওসারের স্ত্রী শান্তা বেগম (২৭) শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। দগ্ধ অন্যজন তাঁদের প্রতিবেশী হৃতিকা পাল (৪) স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। শান্তা বেগমের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর শরীরেরও ৫৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
নিহত কাওসার খান কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের বয়লা খানবাড়ির বাসিন্দা আব্দুস সালাম খানের ছেলে। তিনি মুন্সিগঞ্জের আবুল খায়ের গ্রুপে ওয়েল্ডার শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কাওসারের ছোট ভাই কাইয়ুম খান বলেন, ‘আমার ভাই, ভাইয়ের দুই সন্তান চলে গেল। ভাবিও মৃত্যু পথযাত্রী।’ এ ঘটনায় সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন তিনি।