Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

আমনে অতিরিক্ত খরচের বোঝা

হৃদয় হোসেন মুন্না, বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি

আমনে অতিরিক্ত খরচের বোঝা

সার ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বরগুনার বেতাগী উপজেলার কৃষকদের মধ্যে। ধান উৎপাদনে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। 
খেত প্রস্তুত থেকে শুরু করে সেচ দেওয়া, মাড়াই করা, ফসল ঘরে তোলা, শ্রমিকের মজুরি—সব ক্ষেত্রেই তাঁদের কাঁধে এখন বাড়তি খরচের বোঝা। ফলে এবার অতিরিক্ত খরচের কারণে  আগের বছরের চেয়ে আমন চাষে কৃষকেরা লোকসানের শঙ্কা করছেন।

জানা গেছে, এবার আমন মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে ধানে সেচ বেশি লাগছে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ আরও বাড়ছে। এ অবস্থায় হঠাৎ করে ইউরিয়া সারের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ৬ টাকা। সেই সঙ্গে ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ১১৪ টাকা। এতে পাওয়ার টিলারের মাধ্যমে জমি চাষেও খরচ বেড়েছে। ফলে এবার আমন চাষে বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হবে কৃষকদের। এতে এবারের মৌসুমে বেতাগী উপজেলায় ১০ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে ৩২ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

গত কয়েক দিনে উপজেলার হোসনাবাদ, ঝোপখালী, মোকামিয়া, বিবিচিনি, কেওড়াবুনিয়া, কাউনিয়া, চান্দখালী, বদনিখালি, কালিকাবাড়ি এলাকা ঘুরে বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, এবার আমন মৌসুমে এক বিঘা জমিতে খরচ হবে প্রায় ৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৫০ কেজি বস্তার ইউরিয়া, টিএসপি, ফসফেট ও ড্যাব সার ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ৫০ কেজি বস্তার পটাশ সার ৭৫০ টাকা হিসাবে তাঁদের কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া জমি প্রস্তুত, শ্রমিক, হাল চাষ ও চারা রোপণ করতে সাড়ে ৬ হাজার টাকা খরচ হবে। বিগত মৌসুমে এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ এবার সার, সেচ ও হাল চাষে অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার টাকার মতো।

উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের কৃষক শহীদ হাওলাদার বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করতে খরচ হবে প্রায় ৬ হাজার টাকা। এরপর নিড়ানি, কীটনাশক, সারসহ কাটা-মাড়াইয়ের খরচ আছে। কিন্তু ধান পাওয়া যাবে এর থেকে কম। সে হিসাবে উৎপাদন খরচই উঠবে না। তাই এবার ধান চাষে লোকসান হতে পারে।

একই এলাকার কৃষক বশির হাওলাদার জানান, তিনি গত আমন মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষের জন্য নিতেন ১৮০ টাকা। হঠাৎ ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা হওয়ায় এবার তিনি বাধ্য হয়ে প্রতি বিঘা জমি ২৫০ টাকা মূল্যে চাষ করছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের সার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ইউরিয়া সারের ৫০ কেজি বস্তা ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু সরকারিভাবে সারের দাম বাড়ায় এখন তা ৩০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ১০০ টাকা বস্তা বিক্রি করতে হচ্ছে। হঠাৎ সারের দাম বাড়ায় বিক্রি কিছুটা কমেছে। ফলে কৃষক এবার ধান চাষে যে টাকা ব্যয় করবে, সে টাকা না-ও উঠতে পারে।’

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেওড়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক মো. রাজিব জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করছেন। সার, জ্বালানি তেল, কৃষিশ্রমিকের মজুরি, চারা রোপণসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ফসল ফলাতে তাঁকে গতবারের চেয়ে এবার বেশি টাকা ব্যয় করতে হবে। কিন্তু মৌসুম শেষে উৎপাদন খরচ উঠবে কি না, তা নিয়ে তাঁর শঙ্কা রয়েছে। যদি কোনো কারণে ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া না যায়, তাহলে তাঁকে লোকসান গুনতে হবে।

বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির চেয়ে রাসায়নিক সারের দাম বাড়ার প্রভাব বেশি পড়েছে। এতে আমন চাষে কৃষকের ব্যয় কিছুটা বাড়তে পারে। এ জন্য খরচ কমাতে জমিতে পরিমিত মাত্রায় সার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইউরিয়া সারের বিকল্প হিসেবে কৃষকেরা ড্যাব সার ব্যবহার করলে খরচ কিছুটা কম হবে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ