কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের বিভিন্ন হাওরে অবাধে চলছে কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে মৎস্য নিধন। এতে নষ্ট হচ্ছে হাওরের বাস্তুতন্ত্র। ব্যাহত হচ্ছে অনেক দেশি মাছের প্রজনন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন নিষিদ্ধ জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরছেন জেলেরা। কিন্তু নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ নিধন রোধে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে জেলা মৎস্য অফিস বলছে, প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অপরাধীদের শাস্তি দিচ্ছেন। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার একাধিক হাওর ঘুরে দেখা গেছে, পানিতে জেলে ও মৌসুমি জেলেরা কারেন্ট জাল, চায়না দোয়ারি (ম্যাজিক জাল) ও ভীম জালসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরছেন। এ সব জালের ব্যবহার চরমভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাশয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। ব্যাহত হচ্ছে দেশীয় মাছসহ জলাশয়ে থাকা অন্যান্য প্রাণীদের প্রজনন। তাই সরকারিভাবে এসব জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ।
স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। তাই বেশি মাছের জন্য বাধ্য হয়ে এসব জাল ব্যবহার করছেন তাঁরা। অন্যদিকে মৌসুমি জেলেরা বলছেন, এখন বোরো ধান কাটা শেষ। বাড়িতে অলস বসে না থেকে তাঁরা জাল নিয়ে হাওরে যান। এতে পরিবারের খাবারের পাশাপাশি, মাছ বিক্রি করে কিছুটা আয়ও হয়। অনেকে জানেন না এসব জাল ব্যবহার করে মাছ ধরা নিষিদ্ধ।
জেলে কামাল মিয়া (২৮) বলেন, 'কি করমু কন্ কাজ করে তো খেতে হবে। যেটা দিয়ে সহজে বেশি মাছ ধরন যায়, সেইটাই করি। ম্যাজিক জাল নিষেধ হইলে কারখানা বন্ধ করলেই তো আমরা পাই না। যারা জাল তৈরি করে হেরারে আগে ধরুক।'
মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমি মাসিক সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব নিষিদ্ধ জাল জব্দ করতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এ নিয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ রিপন কুমার পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলেদের সচেতনতা বাড়াতে আমরা প্রশিক্ষণ ও নানামুখী প্রচার করছি। বিশেষ সময়ে জেলেদের জীবিকার জন্য প্রণোদনা প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় জেলে ও সাধারণ মানুষ মিলেমিশে সচেতন হতে হবে। প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অপরাধীদের শাস্তি দিচ্ছেন। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।