১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকালে মাইন বিস্ফোরণে নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার এক বাসায় নিহত হন একই পরিবারের ৯ সদস্য। শহীদদের মধ্যে মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সমাহিত করা হয় সাতজনকে। যে স্থানে সাতজনকে সমাহিত করা হয়েছিল তা আজও অরক্ষিত। গণকবরের জায়গায় গড়ে উঠেছে স্থাপনা। গত কয়েক বছর ধরে অজানা এই ইতিহাস উন্মোচন এবং গণকবর সংরক্ষণের দাবিতে আয়োজন করা হচ্ছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় বিশ্ব সিলেট সম্মেলন আয়োজক কমিটির উদ্যোগে সাত শহীদ স্মরণে ‘লেখা আছে অশ্রু জলে’ শীর্ষক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আজ আমরা বিজয়ের ৫০ বছর উদ্যাপন করছি। ৫০ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধের এমন বেদনাবিধুর ইতিহাস আড়ালে পড়ে থাকা আমাদের জন্য লজ্জার। নগরীর ভেতরে এই গণকবরের কথা আমার জানা ছিল না। আমি অবশ্যই এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেব। এই মাসেই শহীদ পরিবার, জায়গার মালিক পক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসবে। সবার সহযোগিতায় এই গণকবর সংরক্ষণ ও সমাধি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
সিলেটের নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক ও বিশ্ব সিলেট সম্মেলন আয়োজন কমিটির প্রতিনিধি আব্দুল করিম কিমের সঞ্চালনা ও মুক্তিযোদ্ধা বেদানন্দ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে শোকসভায় শোকের ইতিহাস তুলে ধরেন শহীদ পরিবারের সন্তান পরীক্ষিত এন্দ ও তাপস বন্ধু দাস।
বক্তব্য দেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক আল-আজাদ, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, পূজা উদ্যাপন পরিষদ, সিলেট মহানগরীর সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে যাদু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এনামুল মুনির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সহসভাপতি উজ্জল দাস, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুদীপ্ত অর্জুন, দুষ্কাল প্রতিরোধ আন্দোলনের দেবাশীষ দেবু, আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন।
উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সন্তান প্রতীক এন্দ, সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দ্বীপ দাস সুজক, সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রুতির পরিচালক সুকান্ত গুপ্ত, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা নিরঞ্জন দাশ, লেখক-গীতিকার আশফাকুর রহমান, শিশু কিশোর সংগঠন উষার তমিস্রা তিথি প্রমুখ।