আবদুল আযীয কাসেমি
পবিত্র রমজানে অন্যান্য মাসের বাইরে বিশেষ কিছু ইবাদত আছে। এর মধ্যে সদকাতুল ফিতর অন্যতম। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সামর্থ্যবান মানুষের জন্য সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করা হয়েছে।
রোজা রাখার ক্ষেত্রে আমাদের নানা ত্রুটি-বিচ্যুতিকে পূর্ণতা দিতে মুসলিম উম্মাহর জন্য এ বিশেষ ইবাদত প্রণীত হয়েছে। সদকাতুল ফিতরের অপর নাম জাকাতুল ফিতর। ইমাম ওয়াকি ইবনুল জাররাহ বলেন, রমজান মাসের সদকাতুল ফিতর নামাজের সিজদায়ে সাহুর সমতুল্য। অর্থাৎ নামাজে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু দিলে এটা পূর্ণ হয়ে যায়, তেমনি রোজার মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে সদকাতুল ফিতরের মাধ্যমে এর প্রতিকার হয়।
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ প্রসঙ্গে ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সামর্থ্যবান সবার ওপরই এটা আবশ্যক।’ (বুখারি)
অন্য হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজা পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা রোজা পালনকারীর অনর্থক-অশ্লীল কথা-কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থার মাধ্যম। যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ)
সদকাতুল ফিতর ঈদের নামাজে যাওয়ার আগেই আদায় করা সুন্নত। কোনো কারণে নামাজের পরে দিলেও আদায় হয়ে যাবে। একাধিক সদকাতুল ফিতর যেমন একজনকে দেওয়া জায়েজ, তেমনি একজনের সদকাতুল ফিতর একাধিক ব্যক্তির মধ্যে ভাগ করে বণ্টন করা যায়। এতে কোনো অসুবিধা নেই।
আবদুল আযীয কাসেমি
শিক্ষক ও হাদিস গবেষক