উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে দুধকুমার নদ ও রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া ভাঙনে বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি, রাস্তাঘাটসহ ঘরবাড়ি।
নাগেশ্বরী: উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বড়মানী ও আনছাড়ের হাট এলাকায় ভাঙন চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অস্থায়ী বাঁধটির প্রায় ১০০ ফুট দুধকুমারে বিলীন হয়েছে। এতে শত শত বিঘা আবাদি জমিসহ কয়েকটি গ্রামের বসতভিটায় ভাঙন ও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে থাকা বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। যদিও ওই সব এলাকায় নদীশাসন ও ভাঙন রোধে পাউবোর কাজ চলমান রয়েছে।
আনছাড়ের হাট এলাকায় ভাঙনে বসতভিটাসহ সহায়-সম্বল হারিয়েছেন আমিনুর রহমান, বাচ্চু মিয়া, মরিয়ম বেগম, আবুল হোসেনসহ অনেকে। মরিয়ম বেগম জানান, জুন মাসের শেষের দিকে তাঁর বাড়িঘর নদে বিলীন হয়। ২০ শতক আবাদি জমিও চলে গেছে ভাঙনে। এখন পরিবারসহ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
বড়মানী গ্রামের জমির হোসেন জানান, তিন-চার দিন থেকে ভাঙন তীব্র হয়েছে। এবার বাঁধ ভাঙনের মুখে পড়েছে। হুমকিতে রয়েছে শত শত বিঘা আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি।
কুড়িগ্রামের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নাগেশ্বরীর বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে দুধকুমার নদের তীর রক্ষা কাজ চলছে। আমরা জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু করেছি; যা ২০২৫ সালে শেষ হবে। মাঝখানে বন্যার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। আর চলমান ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে।’
কাউনিয়া: গতকাল বুধবার দুপুরে কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হয়। অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ায় বেশ কয়েকটি চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গতকাল সকাল ৯টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অপর দিকে একই সময় কাউনিয়া রেলওয়ে পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাটিতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ায় রংপুরের কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে।
কাউনিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবীব সরকার বলেন, ‘আজ (বুধবার) সকালে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় উপজেলার আরাজিশাহাবাজ, গোপিডাঙ্গা ও ঢুষমাড়া গ্রামের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষ যাতে কষ্ট না পান, এ জন্য সরকারিভাবে আমাদের সব প্রস্তুতি আছে।’