দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ১৪ লিচুবাগান থেকে ৪৮ টন মধু সংগ্রহ করেছেন মৌচাষিরা। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এতে মৌ চাষ করে চাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি মুকুলে পরাগায়ন ঘটায় লিচুর বেশি ফলনের আশা করছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা জানান, চলতি বছর প্রতিটি লিচুবাগানে ভালো মুকুল এসেছে। আর এ কারণে প্রচুর মৌমাছির আগমন ঘটেছে। লিচুগাছ থেকে মৌমাছি মধু আহরণের ফলে বেশি পরাগায়ন ঘটে। ফলে ৩০ শতাংশ লিচুর ফলন বেশি হয়। তা ছাড়া বর্তমানে মৌচাষিদের দ্বারা উৎপাদিত মধু দেশের অর্থনীতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখার ফলে এঁদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, লিচুবাগানে প্রতিবছর খরচ করতে হয় না এবং অল্প পরিচর্যায় মোটা অঙ্কের অর্থ আয় হয় বলে অনেকেই লিচুর বাগান করেছেন। চলতি বছর উপজেলায় ৫৫৫ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। বর্তমানে লিচুর বাগানগুলো মুকুলে ছেয়ে গেছে। উপজেলার পুনট্টি ও ভিয়াইল ইউনিয়নে লিচুবাগানগুলোতে বিপুল পরিমাণ মুকুল এসেছে। বাগানের মালিক হানিফ খান ও আরিফ হোসেনের বাগানগুলোতে মৌচাষিরা ১০০ থেকে ১৫০টি করে ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
মৌচাষি দুলাল হোসেন তালুকদার জানান, বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌ চাষ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তাঁরা। বাগানে তাঁরা দুই শতাধিকের বেশি ব্রড ও নিউক্লিয়াস নামের ছোট-বড় কাঠের বাক্স বসিয়েছেন। প্রতিটিতে একটি রানি, একটি পুরুষসহ অসংখ্য এপিচ মেইলিফ্রা জাতের কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা ম-ম গন্ধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় লিচুর মুকুলে। পরে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা নিজ নিজ কলোনিতে মৌচাকে এনে জমা করে। ১০ থেকে ১৭ দিন অন্তর অন্তর প্রতিটি বাক্স থেকে চাষিরা ছয় থেকে সাত মণ মধু সংগ্রহ করেন। যে লিচুগাছে মৌমাছির আগমন বেশি হয়, সে গাছের মুকুলে পরাগায়ন ভালো হয়।