নেত্রকোনায় সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারির তালিকায় একই শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার এসেছে। সেই সঙ্গে তালিকায় একাধিকবার নাম থাকা শিক্ষার্থীদের আবেদনেও একাধিক জন্মনিবন্ধন নম্বর দেখা গেছে। এ ছাড়া বালক বিদ্যালয়ের তালিকায় এক ছাত্রীর নামও রয়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে প্রতারণা বলেছেন অভিভাবকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেত্রকোনা পৌরশহরের সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর নাম তিনবার, আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে (বালক) আরেকজনের নাম দুইবার পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর নাম তিনবার এবং অপর দুজনের নাম দুইবার করে রয়েছে।
তালিকায় একাধিকবার নাম থাকা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতি আবেদনে ভিন্ন ভিন্ন জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এদিকে বালক বিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও নেত্রকোনা শহরের আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীর নামও তালিকায় রয়েছে।
তালিকায় নাম না থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে একাধিক জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে পছন্দের স্কুলে ভর্তির জন্য অভিভাবকগণ এমন কাজটি করেছেন।
নেত্রকোনা পৌরশহরের সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তালিকায় আনিকা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীর নাম তিনবার রয়েছে। তার মা তাসলিমা আক্তার একাধিক আবেদন করেছেন বলে স্বীকার করেন। তবে অন্য কিছু বলার আগেই মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে দুইবার নাম থাকা শিক্ষার্থী আবির আনোয়ারের মা হাসনা আক্তার একাধিক আবেদনের বিষয়টি স্বীকার করলেও একাধিক জন্মসনদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তালিকায় নাম না থাকা অভিভাবক নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা সুমা পারভীন ও রোকেয়া ইসলাম একজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার থাকায় তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আকলিমা খাতুন বলেন, দুইবার নাম আসা ছাত্রের একটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন অনলাইনে করেছে। লটারি হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে। আমাদের হাতে এর নিয়ন্ত্রণ নেই। তালিকায় এক শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার থাকলে ভর্তি সে একবারই হবে। ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়ে শূন্য জায়গা পূরণ করা হবে।’
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশকে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি অবগত করেছেন। একাধিক জন্মনিবন্ধন ব্যবহারকারী অভিযুক্ত অভিভাবকদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।