গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মরু প্রামাণিকের তরুণ কুমার থানায় বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে পাঁড়েরা গ্রামে দেখা গেছে, গ্রামের সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সামনে ফাঁকা জায়গায় আকাশের নিচে মরু প্রামাণিক তাঁর পরিবারের ১১ সদস্য নিয়ে মাটিতে বসে আছেন। আর প্রতিবেশীরা এই দৃশ্য নীরব ভাবে তাকিয়ে দেখছেন। পাশেই মরু প্রামাণিকের দখল করা বাড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য বেলাল হোসেনের নেতৃত্বে বসেছে দরবার।
ভুক্তভোগী মরু প্রামাণিক বলেন, ‘সংসারের খরচ চালাতে প্রায় ৩ বছর আগে চৌগ্রাম এলাকার দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। পরে সেই টাকা পরিশোধ করতে সুদে-আসলে ২০ হাজার টাকা করে ১৬ কিস্তিতে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেরত দিই। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। শেষ পর্যন্ত একমাত্র সম্বল ভিটেমাটিও দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহের নামে লিখে দিতে হয়েছে। কথা ছিল কয়েক মাস পর আবার বাড়িটি ফেরত দেবে। কিন্তু এখন জোর করে ঘরের বাইরে বের করে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে।’
এলাকাবাসী জানান, চড়া সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ জোর করে বাড়িটি লিখে নিয়ে গোপনে মরু প্রামাণিকের প্রতিবেশী সুমন নামের একজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন সেই বাড়িটি দখল মুক্ত করতে ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর গত বুধবার বিকেলে মরু প্রামাণিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দিয়েছেন ইউপি সদস্য ও তাঁর লোকজন।
এ বিষয়ে দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ বলেন, তিনি সুদের কোনো কারবার করেন না। তিনি সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ওই জায়গা কিনে অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন তাঁর নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সামাজিকভাবে তাঁদের ঘর থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এলাকা ছাড়া করার হুমকি-ধমকি বিষয়টি সঠিক নয়।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।