লক্ষ্মীপুরে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ হাজারের বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ শিশু ভর্তি হচ্ছে। অথচ শয্যা রয়েছে ১৫টি। শয্যার তুলনায় ১০ গুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলার রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও রামগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্র একই।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১০০ শয্যার লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালে এসব শিশু চিকিৎসার জন্য ভিড় করছে। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত। এ ছাড়া শিশু হাসপাতালে গড়ে ৩০-৩৫ জন ভর্তি হচ্ছে। প্রতি শয্যায় এক শিশু চিকিৎসা নেওয়ার কথা থাকলেও নিচ্ছে তিনজন। শয্যাসংকটে হাসপাতালের বারান্দায় গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেক শিশু।
এদিকে জেলা প্যাথলজি মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মামুনুর রশিদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম বাসার ও কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জয়নাল আবেদিন ও নিউ জননী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নোমানুর রহমান নোমান জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ। হাসপাতালে পা রাখার জায়গা নেই। হাসপাতালে হাঁটা-চলা করা যায় না। বারান্দা ও শিশু ওয়ার্ডের মেঝেতে শিশুদের রাখা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় এসব রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও তাঁরা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ইছমাইল হাসান বলেন, ঠান্ডার কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। পাশাপাশি শয্যাসংকটে শিশুদের বারান্দায় রাখা হচ্ছে। এটি সামনে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফ্ফার বলেন, গত এক সপ্তাহে ১ হাজারের বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি রয়েছে দেড় শ শিশু। শয্যার তুলনায় ১০ গুণ রোগী রয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। এ সময় তিনি শিশুদের গরম কাপড় পরাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন।