সিলেট শহরতলির লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিক লিমা লোহার (২৪)। অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল। অনলাইন/ ইন্টারনেট সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই তাঁর। কীভাবে টাচ মোবাইল (স্মার্টফোন) ব্যবহার করতে হয় কিংবা কীভাবে অনলাইনে সরকারি সেবা পেতে হয় তা জানতেন না এ গৃহবধূ।
লিমা এখন নিজের সন্তানকে অনলাইনে আবেদন করে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। নিজের ও শ্বশুর-শাশুড়ির আইডি কার্ড করেছেন। ইউটিউব থেকে রান্নাবান্না শিখেছেন। এমনকি নারী ও শিশু নির্যাতন হলে সরকারি সেবা নম্বরে ফোনও করতে পারেন। শুধু লিমা লোহার নয়, তাঁর মতো অনেক নারী-পুরুষ, কিশোরী-তরুণী এখন ডিজিটাল জ্ঞানের অধিকারী হয়েছেন। এটি সম্ভব হয়েছে ‘সেইফ ডিজিটাল স্পেইস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ প্রজেক্ট’ (এসডিএসজিওয়াইপি) প্রকল্পটির মাধ্যমে।
‘সবার জন্য ডিজিটাল দক্ষতা’ স্লোগানে টেলিনর, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল যৌথ উদ্যোগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি হাতে নেয়। স্থানীয়ভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রিলায়েন্স ওমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (আরডব্লিউডিও)। প্রকল্পটির অগ্রগতি ও মূল্যায়ন পরিদর্শন করতে গত ১৯, ২০ ও ২১ মে যথাক্রমে সাভারের ধামরাই, মৌলভীবাজার ও সিলেটের চা-বাগান এবং সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমানসহ অনেকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার সুবিধাভোগীদের নিয়ে সিলেটের লাক্কাতুরা চা-বাগানের গলফ ক্লাব মাঠে প্রকল্পটির অগ্রগতি ও মূল্যায়ন পরিদর্শন উপলক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় লিমার মতো অর্ধশত নারী-পুরুষ তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, দুই বছরের মধ্যে সারা দেশের ২৩ লাখ ৫০ হাজার নারী-পুরুষ, কিশোরী ও তরুণীকে ডিজিটাল জ্ঞান, দক্ষতা, সহনশীলতা ও নিরাপদ অনলাইন-ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ করে গড়ে তুলতে দেড় বছর আগে প্রকল্পটির শুরু হয়।
সোমবার সুবিধাভোগীদের অনেকের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। লিমার মতো আরেক নারী চা-শ্রমিক সুমি গোয়ালা। সুমি বলেন, ‘প্রশিক্ষণটি তাঁর অনেক উপকারে এসেছে। এর আগে বাচ্চার জন্মনিবন্ধন, নিজের ভোটার আইডি কার্ড, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না।