কার্যকারিতা পরীক্ষা ছাড়াই মশা নিধনের ওষুধ কেনায় এর প্রয়োগ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে গত পাঁচ দিন ধরে মশার ওষুধ ছিটাতে পারছে না চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
জরুরি প্রয়োজনে করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ থেকে ওষুধগুলো ব্যবহার করতে চাইলেও কেমিক্যাল পরীক্ষার আগে এসব ওষুধ গ্রহণ করতে রাজি নন স্টোর কর্মকর্তা। পরীক্ষার আগে এসব এডাল্টিসাইড (উড়ন্ত মশা মারার ওষুধ) গ্রহণ না করলে মশার ওষুধ ছিটানো আরও দুই সপ্তাহও বন্ধ থাকবে।
পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, ওষুধগুলো পরিচ্ছন্নতা বিভাগ কিনেছে। ওষুধ শেষ হওয়ার দুই মাস আগে তাঁরা নতুন ওষুধ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করলে এ সংকট তৈরি হতো না।
এদিকে গত কয়েক দিন মশার ওষুধ ছিটানো বন্ধ রাখায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নগরবাসী। তাঁরা বলছেন, এখন চারদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ। অথচ সিটি করপোরেশন কোথাও মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে না।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, এডাল্টিসাইড শেষ হয়ে যাওয়ায় গত দুই-তিন দিন ধরে ওষুধ ছিটানো যায়নি। তবে দু-এক দিনের মধ্যে ওষুধ ছিটানো আবারও শুরু হবে বলে তারা জানান।
এ সম্পর্কে জানতে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেমকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি কল ধরেননি।
পরে উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদুল আলম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘তিন-চার দিন আগে এডাল্টিসাইড ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে তার আগেই জরুরি ভিত্তিতে ২ হাজার ৯০০ লিটার কেনা হয়েছে। কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে ওষুধ সরবরাহ শুরু করেছেন। কিন্তু পরীক্ষা না করার কারণে এগুলো ব্যবহারের অনুমতি স্টোর রুম থেকে দিচ্ছে না। গত দুদিন কয়েকটি ওয়ার্ডের জন্য চাহিদাপত্র ইস্যু করেও স্টোর রুম থেকে কোনো ওষুধ পাওয়া যায়নি। ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকায় দু-এক দিনের মধ্যে যেকোনোভাবে ওষুধ ছিটানো শুরু করা হবে।’
পরিচ্ছন্নতা বিভাগ থেকে দু-এক দিনের মধ্যে ওষুধ ছিটাতে পারবেন বলে জানালেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, আগামী ১৫ দিনেও ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু করতে পারবে না সিটি করপোরেশন। কারণ জরুরি ভিত্তিতে কেনা ২ হাজার ৯০০ লিটার ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করতে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে। তাই এসব ওষুধ ব্যবহার করতে হলে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগকে অন্তত দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।
সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোলার অব স্টোরস নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘মশার ওষুধ কেনার পর সেগুলোর কেমিক্যাল টেস্ট করানোর পর স্টোরে এন্ট্রি করানোর নিয়ম। স্টোরে এডাল্টিসাইডের কিছু চালান আসছে, সেগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করার জন্য পাঠাব।’
শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা করার পর কাগজপত্র হাতে পেলে সেগুলো আমরা তালিকাভুক্ত করব। এর আগে ওষুধগুলো ব্যবহার করার সুযোগ নেই। কারণ আমাকে একটা প্রক্রিয়া মেনেই ওষুধগুলো গ্রহণ করতে হবে। কেননা পরে পরীক্ষায় ওষুধগুলোতে ত্রুটি ধরা পড়লে এর দায়ভার আমাকেই নিতে হবে।’