হোম > ছাপা সংস্করণ

জ্বালানি সংকটে বিদ্যুতে টান, গরমে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজশাহী, নেত্রকোনা, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলায় প্রচণ্ড এবং অন্যান্য জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে লোডশেডিং। তাতে গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ; বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট অনেক বেশি। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) জানিয়েছে, গ্রামাঞ্চলে দৈনিক ৫-৬ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে লোডশেডিং কমানোর উপায়ও নেই তাদের। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, জ্বালানি সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে আছে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, আগামী দিনগুলোতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট আরও তীব্র হতে পারে।

কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও অনুভূত হচ্ছে ৪৪-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর সঙ্গে যানজট, ধুলাবালু আর লোডশেডিং মিলিয়ে নগরের জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে।

জানা যায়, গৃহস্থালি তথা রান্নার কাজেও গভীর হচ্ছে গ্যাস-সংকট। গ্রাহকদের অভিযোগ, দিনের বেশির ভাগ সময় গ্যাস থাকে না বাসাবাড়িতে। যখন গ্যাস আসে, তখন চাপ কম থাকায় রান্না করতে সমস্যা হয়। গ্যাস-সংকট ছুঁয়ে যাচ্ছে সিএনজি ফিলিং স্টেশনেও। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বেশির ভাগ সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের জন্য যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। চালকদের অভিযোগ, একবার গ্যাস নিতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সারিতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে জামান ফিলিং সিএনজি স্টেশনে দেখা যায়, গ্যাসের জন্য অটোরিকশার আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সারি। 

অন্যদিকে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারায় কয়লাভিত্তিক বড় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে আবার ফিরে এসেছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। মাঝখানে কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকায় লোডশেডিংয়ের তীব্রতা কমে এসেছিল। আরইবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গড়ে প্রতিদিন এক হাজার মেগাওয়াট বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

পিডিবির পরিকল্পনা ছিল, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে কয়লাভিত্তিক মেগা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালিয়ে সামাল দেবে লোডশেডিং। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও গ্যাসচালিত বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।

ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু থেকেই অনিয়মিত। গত বছরের ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসা ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে। কখনো এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকে কারিগরি কারণে, কখনো বন্ধ হয় কয়লার সংকটে। সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ ছিল যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে। চার দিন পর পুনরায় উৎপাদনে এলেও ২৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ আছে পর্যাপ্ত কয়লার সংস্থান করতে না পারায়। 

বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ অর্ধেকের কম
জানা যায়, জ্বালানি সাশ্রয় করতে গিয়ে সরকার এরই মধ্যে কমিয়ে দিয়েছে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন।

এর প্রভাব পড়েছে সার্বিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায়। গ্যাসের সংকট থাকায় পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের যে চাহিদা তার অর্ধেকের কম (৪২ শতাংশ) সরবরাহ করতে পারছে পেট্রোবাংলা। সংস্থার সর্বশেষ (৮-৯ মে) দৈনিক গ্যাস ইনটেক-অফটেক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রে দৈনিক ২ হাজার ১৭৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ আছে ১ হাজার ২১২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট।

পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে বেশি ব্যবহার করা হয় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু দেশে গ্যাস-সংকট থাকায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রাখা হচ্ছে।’ 

কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ
পিডিবি সূত্রে জানা যায়, গ্যাস-সংকটের কারণে বন্ধ আছে সিদ্ধিরগঞ্জের ১২০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট। সিদ্ধিরগঞ্জের ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ আছে। এ ছাড়া বন্ধ আছে শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০০ ও ৩৩০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট।

সূত্রমতে, কয়লার অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় আছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। এটি দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করতে না পারায় কেন্দ্রটির উৎপাদন ঝুঁকির মুখে। ডলার সংকটের কারণে পাওনা পরিশোধ করতে না পারায় গত জানুয়ারিতে কয়লা দেওয়া বন্ধ করে দেয় সরবরাহকারী।

এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার বলেন, ‘গ্যাস-সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকার পাশাপাশি কয়লার অভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর চাপ বেড়েছে। এ জন্য লোডশেডিংও বেড়েছে আগের তুলনায়।’

কবে এটি চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না কবে নাগাদ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা যাবে।’ তিনি জানান, রামপালের জন্য কয়লা নিয়ে জাহাজ শিগগির চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন