Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

হার্ব কাহন

মো. আবুল বাশার লিটন

হার্ব কাহন

নানা বাড়িতে ‘লস্করি মুসুরির ডাল’ রান্না হতো মূলত নাতি-নাতনি ছাড়া আর সবার জন্য। নাতি-নাতনিদের জন্য ঢলঢলে সে ডাল পাতে দিতে নানির ছিল ভীষণ আপত্তি। মামিদের আপত্তি উপেক্ষা করে নাতি-নাতনিদের জন্য আলাদা একটা ডাল রান্না করতেন তিনি নিজে।

ঘনত্ব বাদে সে ডালের তেমন কোনো মাহাত্ম্য সাধারণের অনেকেই হয়তো দেখতে পেতেন না, যা পেতাম আমরা নাতি-নাতনিরা কেবল। থকথকে ঘন সে ডালের স্বর্গীয় স্বাদের রহস্যটা লুকোনো ছিল ‘ধনে পাতা’ নামের এক অসাধারণ স্বাদবর্ধক উদ্ভিদের মধ্যে।

রান্না এবং খাবারের জগতে ধনে পাতার মতো এমন হাজারো মসলা এবং হার্ব বা ভেষজের ব্যবহার আছে জগৎ জুড়ে। ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, খাবারের জগতে এগুলোর উপস্থিতি আছে হাজার হাজার বছর ধরে। জানা যায়, পৃথিবীতে ৪১৩ ধরনের হার্ব আছে যার মধ্যে ৪৮টি হার্ব জনপ্রিয়।

‘হার্ব’ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দে নিয়ে খানিক জটিলতা আছে। ইংরেজি হার্ব শব্দটির অর্থ অভিধানে লেখা আছে ‘(১) কোমল নাল বিশিষ্ট উদ্ভিদ, যা মৌসুম শেষে মরে যায়, ঔষধি, তৃণলতা, হরীতকী। (২) খাদ্যের স্বাদ গন্ধ বৃদ্ধিতে বা ওষুধরূপে ব্যবহৃত উক্ত রূপ উদ্ভিদ, যেমন পুদিনা পাতা, মৌরি, ধনেপাতা।’ ফলে হার্ব শব্দটি বাংলাতেও প্রচলিত হয়ে গেছে।

হার্ব এবং মসলার পার্থক্য আছে। সাধারণত কোনো উদ্ভিদের সবুজ পাতা ও ফুলকে রন্ধনকলায় হার্ব বলে ধরে নেওয়া হয়। সেই একই উদ্ভিদের অন্য অংশ যদি ব্যবহারযোগ্য হয় এবং সেই অংশ শুকিয়ে বা তাজা গুঁড়ো করে খাদ্যে রং, স্বাদ, গন্ধ বর্ধনের জন্য ব্যবহার করা হয়, তবে সেটা মসলা বা স্পাইস। সাধারণত, রান্না এবং চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয় হার্ব। তবে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করলে শব্দটি হয় ‘হার্বস’। 

কেন হার্বের ব্যবহার
আজকের দিনে মসলা এবং হার্ব ছাড়া কোনো খাবারই কল্পনা করা সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন ভাবে হার্বের ব্যবহার করা হয় খাবারে। সাধারণত রান্নার কাজে হার্ব ব্যবহার করা হয় খাবারে সুগন্ধ যুক্ত করতে, সাজাতে, সিজনিং করতে, খাবারে ওষধিগুণ যোগ করতে।

আমাদের দেশে একেবারে সাধারণ মানুষের মধ্যে খাবারে হার্বের ব্যবহার খুব সীমিত। সাধারণত সালাদ বানাতে, খাবার সজ্জিত করতে, চাটনি ও ভর্তা বানাতে, খাবারে সুগন্ধি যুক্ত করতে, খাবারে ওষধিগুণ যুক্ত করতে হার্বের ব্যবহার চোখে পড়ে। 

প্রচলিত হার্ব
ধনেপাতা, পুদিনা, তুলসীপাতা, লেমন গ্রাস, কারিপাতা, গন্ধভাদাল, তেলাকুচো পাতা, বেসিল, পার্সলে, মেথি পাতা, তেজপাতা, পোলাও পাতা, লেবু পাতা, পেঁয়াজের কলি, রসুনের পাতা ইত্যাদি। এই বহুল পরিচিত হার্বগুলোর বাইরেও অনেক হার্ব রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় ভাবে অনেক উদ্ভিদের পাতা ব্যবহার করা হয় হার্ব হিসেবে।

হার্বের ব্যবহার

  • চাটনি, ভর্তা ও ভাজি হিসেবে সরাসরি খাওয়া যায় ধনেপাতা, পুদিনা, তেলাকুচো পাতা, গন্ধভাদাল, মেথি পাতা।
  • সালাদে ব্যবহার করা হয় ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, বেসিল, লেবু পাতা, তেলাকুচো পাতা, পেঁয়াজের কলি, রসুনের পাতা।
  • গার্নিশিং বা খাবার সজ্জায় ব্যবহার এ দেশে বহুল ব্যবহার হয় ধনেপাতা, পুদিনা, পেঁয়াজের কলি।
  • খাবারে সুগন্ধ তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয় ধনে পাতা, তেজপাতা, লেমন গ্রাস, কারিপাতা, গন্ধভাদাল, বেসিল, পোলাও পাতা, লেবু পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি।
  • সরাসরি ওষধিগুণের জন্য ব্যবহার করা হয় তুলসী পাতা, পুদিনা পাতা, গন্ধভাদাল। 

মূলত এই নিরীক্ষামূলক পৃথিবীতে খাবারও নিরীক্ষার বাইরে নয়। ফলে প্রায় সব ধরনের হার্ব সব কাজে ব্যবহার করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ