অনিক সিকদার, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির সাধারণ মানুষের মাস্ক ব্যবহারে অনীহা দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সরকারের ১১ দফা নির্দেশনার প্রথম নির্দেশনা দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তারপরও এই এলাকার মানুষ মাস্ক পরিধানের বিষয়ে একদমই উদাসীন।
বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের সাপ্তাহিক বাজারে ঢুকে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষের মুখেই মাস্ক নেই। কেউ কেউ মাস্ক ব্যবহার করেছেন। অনেকের আবার থুতনিতে মাস্ক ঝুলতে দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না।
বালিয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায়ও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে বালিয়াকান্দি থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাওয়া গণপরিবহনগুলোতে হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী মাস্ক পড়লেও অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
মাস্ক না ব্যবহারের বিষয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, আমাগো করোনা হইবো না। আমরা মাঠে কাজ কইরা খাই। এই শরীরে করোনা ঢুকবো ক্যামনে?’
বাজার করতে আসা যুবক রিয়াজ বলেন, ‘মাস্ক ছিল, কিন্তু বাজারে আসার সময় ছিঁড়ে গেছে। বাজার শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় কিনব।’
মাসুম নামের এক পথচারী বলেন, ‘মাস্ক পরতে অস্বস্তি লাগে। আমার আশপাশে কারও করোনা হয়নি। আর করোনা ধরলে, মাস্ক পরলেও ধরবে।’
বৃদ্ধ সুশীল সরকার বলেন, ‘বাজার করতে আইছি। তাই ছাওয়াল (ছেলে) মুহি (মুখে) মাস্ক লাগাইয়ে দিছে। খুলতি মানা করিছে। কিন্তু এটা পড়লি দম বন্ধ হয়ে আসে। কষ্ট হলিও কি করব? করোনা হয়ে গিলি তো প্রাণে মরা লাগবেনে।’
শিক্ষক মুন্সী আমীর আলী বলেন, এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের মাস্ক পরিধানের বিকল্প নেই। আর সরকারের একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসিবুল হাসান বলেন, করোনার বিভিন্ন ধরন রুখতে মাস্ক ব্যবহারের বিকল্প নেই। বহির্বিশ্বে করোনার বিভিন্ন ধরন যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়াচ্ছে তাতে আমাদের উদ্বিগ্ন। তিনি চান সাধারণ মানুষ সরকারি নির্দেশনা মেনে সহযোগিতা করুক। তবে সরকারি আইন অমান্য করে যারা মাস্ক পড়বে না তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।