রাজশাহীর এক কলেজছাত্র কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। ওই ছাত্রের সহপাঠী ও পরিবারের ভাষ্য, শিক্ষকেরা অপমান করায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন রাফিউল ইসলাম রাফি (১৮)।
রাফিউল এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা গুরুতর। কীটনাশক পানের পর গত রোববার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাজী আবুল হোসেন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির রাজশাহী শাখার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র রাফিউল। টাঙ্গাইল থেকে পরিচালিত বেসরকারি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির রাজশাহী শাখার ক্যাম্পাস শহরের ওমরপুর এলাকায়। রাফিউল ইসলামের বাড়ি জেলার পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামে। তাঁর বাবা রবিউল ইসলাম একজন স্কুলশিক্ষক। রাফিউল কলেজের পাশেই একটি মেসে থাকেন।
কীটনাশক পানের আগে রাফিউল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষকেরা শুধু তাঁকেই নয়, তাঁর বাবা-মাকেও অপমান করে কথা বলেছেন। দুই মাস ধরেই শিক্ষকেরা তাঁকে অপমান করে আসছিলেন। এসব তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাই ‘এই জীবনকে বিদায় দিলাম’ বলে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন রাফিউল।
রাফিউলের সহপাঠীরা বলেন, কলেজের মাসিক সভায় শিক্ষার্থীর সমস্যার কথা শুনতে চেয়েছিলেন শিক্ষকেরা। সেখানে রাফিউল বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু সবার সামনে সমস্যার কথা তুলে ধরায় রাফিউলকে বকাঝকা করেন শিক্ষকেরা। দুই মাস ধরে উপাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় প্রধান সাজ্জাদ আলী ও উপবিভাগীয় প্রধান সাদিকুল ইসলাম তাঁকে অপমান করতেন। তাঁর বাবা-মা সম্পর্কেও অসম্মানজনক কথা বলা হতো।
রাফিউলের বড় ভাই সাব্বির খান বলেন, ‘আমার ভাই এখনো হাসপাতালে। তাঁর কেবল জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু যন্ত্রণা হচ্ছে। চিকিৎসকেরাও এখনো তাঁকে শঙ্কামুক্ত ঘোষণা করেনি। তাই বিস্তারিত তাঁর কাছে শোনা হয়নি। আমরা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন টাঙ্গাইলে থাকেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কয়েকবার কল করা হলেও ধরেননি। সাড়া মেলেনি এসএমএস পাঠানো হলেও। তাই কলেজের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।