হোম > ছাপা সংস্করণ

আগেরগুলো বন্দুকযুদ্ধ না খুন?

শাহরিয়ার হাসান, কক্সবাজার থেকে

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান গুলি করে মেরে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন তৎকালীন টেকনাফ থানা-পুলিশ। ওই দিন এমন পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি যে গুলি করতে হবে। হাঁটু গেড়ে আত্মসমর্পণ করার পরও ১০ সেকেন্ডের সিদ্ধান্তে দুই রাউন্ড গুলি করেন পরিদর্শক লিয়াকত। যা চাইলে তিনি এড়াতে পারতেন। গুলি করে মানুষ মারা আর বন্দুকযুদ্ধে নিহত এক নয়। মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ে এ কথা বলেছেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

সিনহা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর থেকেই নানা মহলে আবার বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপের হাতে অন্য যাদের মৃত্যু হয়েছে, সেগুলো কী ছিল বন্দুকযুদ্ধ না খুন?

গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁরা নিজ উদ্যোগে ওসি প্রদীপের হাতে বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়া ১০৪টি ঘটনা সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। স্বজনেরা মামলা করেছেন ১৬টি ঘটনায়। যাদের অধিকাংশেরই দাবি, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করেছে টেকনাফ থানা-পুলিশ। 

আসলে কোন পরিস্থিতি তৈরি হলে গুলি করা উচিত আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলেই কী কাউকে গুলি করতে পারে—এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, পুলিশ তখনই গুলি করতে পারে যখন তাদের জানমালের হুমকি থাকে এবং এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের। যদি এটা না হয় তা বুঝতে হবে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়েছে। আর সেখানেই সমস্যা রয়েছে।

সম্প্রতি ক্রসফায়ার নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এলিট ফোর্স র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অপরাধীদের মধ্যে কোনো ‘বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা’ ঘটেনি।

কেন ‘বন্দুকযুদ্ধ’-এর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় জানতে চাইলে র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা নির্ভর করে অভিযানের পরিস্থিতির ওপর। যখন অপরাধীরা প্রথমে গুলি চালায়, তখনই পাল্টা গুলি চালানো হয়। 

তবে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলছেন, বন্দুকযুদ্ধের নামে প্রকারান্তরে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ইত্যাদি নামে যে গল্পগুলো এত দিন বলে আসছিল, সেই গল্পগুলোর ভেতরে সত্যতা নেই। মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ের মাধ্যমে সত্যটি আবার বেরিয়ে এসেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলেই এমন হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে পারে। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে তাদের বাহিনীর চাওয়ার ওপর। 

সেই মেরিন ড্রাইভ এখন শান্ত

কক্সবাজার শহর ছাড়িয়ে হিমছড়ি, ইনানী হয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে এগোনোর সময় পর্যটকদের চোখ ভরে যায় প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড় আর মাঝখানে মসৃণ পিচের পথ চলে গেছে মাইলের পর মাইল। দীর্ঘ এই সড়কে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ গেছে অন্তত ৫৬ জনের। তবে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর পর ওই সড়কে আর কোনো কথিত বন্দুকযুদ্ধ হয়নি। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ২৮৭ জন। এই সময়ে কেবল কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। অভিযোগ আছে, এসব ঘটনার সিংহভাগই হয়েছে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে। 
জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, মেরিন রোড কেন্দ্রিক মাদক কারবার কমে গেছে। আর তাঁদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গুলির ঘটনা ঘটেনি।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন