নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
মাহমুদা খানম আঁখি (২১) ও আনিসুল ইসলাম (৩২) বিয়ে করেছিলেন পরস্পরকে ভালোবেসেই। প্রায় দুই বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতি ও আয়োজনেই তাঁদের বিয়ে হয়। আঁখি আর বেঁচে নেই। গত রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য স্বামী আনিসুলই তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন। আনিসুলকে করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উত্তর জলদি গ্রামের মফিজুর রহমানের মেয়ে আঁখি বেসরকারি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবি তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁদের পরিবার চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া ল্যান্ড মার্ক হাউজিং সোসাইটি এলাকায় থাকে। আর আঁখি স্বামী আনিসুলের সঙ্গে চান্দগাঁও শওকত আবাসিক এলাকায় থাকতেন। আনিসুল চট্টগ্রাম আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঈনুর রহমান জানান, আঁখির ভাই মিজানুর রহমান গতকাল সোমবার চান্দগাঁও থানায় আনিসুল ইসলাম, তাঁর মা ফরিদা আক্তার (৫০) ও বোন হামিদা বেগমকে (৩৪) আসামি করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ আনিসুলকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে আঁখিকে বিভিন্ন সময় শারীরিক নির্যাতন করতেন আনিসুল। দুই মাস আগে যৌতুক হিসেবে আঁখির কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তাঁর স্বামী। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে ঘরের মধ্যে আটক রেখে তালা মেরে মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে আঁখি তাঁর পরিবারকে জানান। ১৩ ডিসেম্বর স্বামী আনিসুল তাঁকে
প্রচণ্ড মারধর করেন। তাঁর পেটে লাথি মারা হয়। শনিবার পেটে ব্যথা শুরু হলে আঁখিকে বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিষয়টি আঁখির পরিবারকে জানানো হয়।
আঁখির ভাই মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসকেরা পেটে অস্ত্রোপচারের কথা জানান। কিন্তু হাসপাতালটিতে অস্ত্রোপচার সম্ভব না হওয়ায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে রোববার বিকেল ৪টায় সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর দুই ঘণ্টার মধ্যে আঁখি মারা যান।
এদিকে আঁখি হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে গতকাল সকালে বিক্ষোভ করেছেন সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।