নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের খাল-নালা পরিষ্কার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে ১০০ কোটি টাকা চেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
মেয়র বলেন, প্রকল্প গ্রহণের সময় আলোচনা হয়েছিল জলাবদ্ধতা প্রকল্পের খাল-নালাগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য সিটি করপোরেশনকে প্রতি বছর ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। আপনারা (সিডিএ) যদি ১০০ কোটি টাকা দেন, তাহলে খাল-নালাগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব বুঝে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। মেনটেন্যান্সের টাকা যদি কাল দেবেন বলেন, আমরা কালই দায়িত্ব নিয়ে নেব। কিন্তু অর্থের সংস্থান না হলে আমাদের পক্ষে এই দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয়।’
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর টাইগার পাস এলাকায় অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সমন্বয় সভায় চসিক মেয়র এ কথা বলেন। এর আগে সিডিএর পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে কাজ শেষ হওয়া সাতটি খাল ও ২৬ কিলোমিটার নালার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বুঝে নিতে সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করা হয়। সিডিএর এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র এ কথা বলেন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘করপোরেশন এলাকার খাল, নালা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের হাতে খাল-নালা পরিষ্কার করার জন্য কোনো প্রকল্প নেই। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ বুঝে নিতে হলে আমাদের বাড়তি জনবল লাগবে। বাড়তি অর্থের প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু আমাদের হাতে বাড়তি জনবল নেই, বাড়তি অর্থও নেই।’
সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ উপস্থিতি ছিলেন। তিনি বলেন, ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার যে কথা বলা হয়েছিল, তখন সিদ্ধান্ত ছিল প্রকল্পটির উন্নয়নকাজ করবে সিডিএ আর রক্ষণাবেক্ষণ করবে সিটি করপোরেশন। কিন্তু এখন পুরো কাজটাই করে দিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তাই প্রকল্পের অধীনে এই টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই।
জহিরুল আলম দোভাষ আরও বলেন, ‘আমরা সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছি। খাল-নালা এগুলোর মালিক সিটি করপোরেশন। সিডিএ প্রকল্পের অধীনে কিছু খাল-নালা করে দিচ্ছে। সিটি করপোরেশন এগুলো মেইনটেন করবে। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের চলমান চার বছরের কাজের মধ্যে এখনো দুই বছরের কাজ বাকি। এখনই শতভাগ ফলাফল পাব এটা মনে হয় না।’
এর আগে প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরনের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী। এ সময় তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ২৩ খালের স্লুইস গেট নির্মাণ ও ১২টি খালের রেগুলেটর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সম্পন্ন না হওয়াকে উল্লেখ করেন।
শাহ আলী বলেন, ‘প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের মধ্যে সাতটির প্রতিরোধ দেয়ালের (রিটেইনিং ওয়াল) কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। জুনের আগে ১৮টি খালের প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবে। এগুলো বুঝে নিতে ইতিমধ্যে আমরা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। প্রকল্পের অধীনে থাকা ৫৪ কিলোমিটার নালার মধ্যে দুই দফায় ২৬ কিলোমিটার নালার কাজ বুঝে নিতে চিঠি দিয়েছি। প্রকল্পের অধীনে যেসব খাল নালার কাজ শেষ হয়েছে, সেগুলো বুঝে নিলে আমাদের ওপর চাপ থাকবে না। কারণ এসব খাল-নালা মেনটেন্যান্সের জন্য জনবল নেই। আর এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা না হলে সামনের বর্ষায়ও প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে না।’