দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ। সবুজ মাঠে অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। তার মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে গাঢ় সবুজ রঙের ‘উচ্ছে’। এমন দৃশ্য মাদারীপুরের ‘উচ্ছেগ্রাম’ খ্যাত লক্ষ্মীপুরের। উচ্ছে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
এ গ্রামের উচ্ছে প্রতি মৌসুমে বিক্রি হচ্ছে অন্তত ২০ কোটি টাকার ওপরে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটলে এ গ্রামটিই হবে অর্থনীতির উন্নয়নের একটি মাইলফলক। কৃষি অফিসও এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
দেখা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় চলতি মৌসুমে উচ্ছে চাষ হয়েছে ৫৭০ হেক্টর জমিতে। উচ্ছে তোলার সময় চাষিদের মধ্যে একধরনের উৎসব বিরাজ করে। প্রতিদিন সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্রামের মৃধার মোড় এলাকায় হাট বসে। বিভিন্ন জেলার পাইকারেরা এসব উচ্ছে কিনে নিয়ে ঢাকা, মাগুরা, ফরিদপুর, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন। তবে গেল সপ্তাহে উচ্ছের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা। ফলে চাষিদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
উচ্ছেচাষি গনি মিয়া বলেন, ‘এবার জমিতে উচ্ছেসহ পেঁয়াজ চাষ করেছি। সপ্তাহ খানেক আগেও প্রতি কেজি উচ্ছে বিক্রি করেছি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে তার অর্ধেক দামে। যে কারণে যতটা লাভ হওয়ার কথা ছিল, তার অর্ধেকও হবে না। তবু দিন দিন এ গ্রামে উচ্ছের চাষও বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।’
ব্যবসায়ী আবুল চৌকিদার বলেন, ‘এই মোকামে প্রতি মৌসুমে অন্তত ২০ কোটি টাকার উচ্ছে ব্যবসা হয়। এখানে লাভ-ক্ষতি নিয়েই ব্যবসা করতে হয়। তবে আগের চেয়ে ব্যবসা একটু কম হচ্ছে। মাস খানেক আগেও ভালো দাম ছিল।’
বাজার সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, ‘উচ্ছে চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হলেও দরপতনে চিন্তিত হতে হয়। মোকামে আসতে সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়কটা আরও বড় করলে যানবাহন দ্রুত আসা-যাওয়া করতে পারত। তাই সড়কটি দ্রুত মেরামত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ভবিষ্যতে উচ্ছের চাষাবাদ বাড়াতে সার, কীটনাশকসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। উচ্ছে চাষে সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।’