ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে কয়েক দিন ধরে লোডশেডিং বেড়েছে। বালিয়াডাঙ্গী বাজার, হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদের কার্যালয় ছাড়া গ্রামগুলোতে মোবাইল ফোন পুরো চার্জ দেওয়ার মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থায়ী থাকে না বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন বলছে, চাহিদা বাড়ায় মেইন লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরবরাহ না থাকলে লোডশেডিং হবে। বালিয়াডাঙ্গী শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে দুওসুও ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা বদিউজ্জামান রোববার সকালে বালিয়াডাঙ্গী বাজারে আসেন মোবাইল ফোন চার্জ দিতে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারা রাত চার্জারের সঙ্গে মোবাইল ফোন লাগিয়ে সুইচ অন করে রেখেছিলাম। ১৫ শতাংশও চার্জ হয়নি। ব্যবসায়ী হিসেবে মোবাইল ফোন ছাড়া চলা অসম্ভব, তাই বাজারে এসেছি চার্জ দিতে।’
উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের আবুল কাসেম বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার রাতে তিনবার বিদ্যুৎ এসেছিল। ৪০ মিনিটও স্থায়ী হয়নি। গরমের কারণে অনেকে ঘুমাতে না পেরে বারান্দা ও গাছতলায় আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই ছোট বাচ্চাদের হাতপাখা দিয়ে বাতাস করে রাত পার করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাড়িঘর ছেড়ে গাছতলায় বসবাস শুরু করতে হবে।’
লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে রয়েছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী, আমজানখোর, ধনতলা, পাড়িয়া ও চাড়োল ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ। এ অবস্থায় দিনের বেলার চেয়েও রাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল হাসান বলেন, ‘দুদিন হলো রাতের বেলা বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে গেছে। যেখানে রাতে ফ্যান ব্যতীত সব ধরনের বাল্ব বন্ধ থাকে, এতে চাহিদা কম হওয়ার কথা। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চার্জ দেওয়াকে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চাহিদা বেড়েছে।’
কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘বালিয়াডাঙ্গীতে প্রায় ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা, আমরা সরবরাহ পাচ্ছি ৩ মেগাওয়াটের একটু বেশি। সেখান থেকে বালিয়াডাঙ্গী বাজার, হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ২ দশমিক ২ মেগাওয়াট সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। অবশিষ্ট বিদ্যুৎ ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে পাঁচটি ফিডারে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকায় এমনটা হচ্ছে। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী না হলে এ সমস্যা আরও বাড়তে পারে।’