নেত্রকোনা প্রতিনিধি
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই প্রথম নেত্রকোনার সোয়াইরসহ তিনটি নদী ও ১২টি খাল পুনর্খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
এই এলাকার নদীর পানিপ্রবাহ চালু রাখা এবং জমিতে সেচ সুবিধার জন্য তিনটি নদ-নদী এবং ১২টি খাল পুনর্খনন করা হবে বলে নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। এ জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০৫ কোটি টাকা। সোয়াইর নদ ছাড়া অন্য দুটি নদ-নদী হচ্ছে কালিহর ও লাউয়ারী। এই তিনটি নদ-নদীর দৈর্ঘ্য ৮০ কিলোমিটার। এগুলোর কোনোটিতেই এখন পানি নেই। বসেছে বাসাবাড়ি, দোকান ও বিদ্যুতের খুঁটি।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত দিকে থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন সোয়াইর নদ পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু কালের আবর্তে ধীরে ধীরে পলি পড়ে পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এখন এর কোনো অস্তিত্ব নেই। যে যেভাবে পেরেছে দখল করেছে। স্থাপনা নির্মাণও করেছে। বাকি দুটি নদ-নদীরও একই অবস্থা। এলাকাবাসীর দাবির মুখে এবং নদীর পরিবেশ পুনরুদ্ধারে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরিপ চালায়। এরপর এই এলাকার মৃতপ্রায় তিনটি নদী পুনর্খননের জন্য প্রকল্প তৈরি করে। এ ছাড়া ছোট-বড় ১২টি খালও পুনর্খননের প্রকল্প হাতে নেয়।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এফ এস মোবারক আলী বলেন, তিনটি নদ-নদীসহ ১২টি খাল পুনর্খনন কাজ শেষ হলে কৃষকদেরই উপকার হবে বেশি।
নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, তিনটি নদ-নদীসহ ১২টি খালের ১২ লাখ ৫৭ হাজার চার শ ঘনফুট মাটি কাটা হবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, নদীগুলোর পুনর্খননের কাজ এলাকাবাসীর জন্য ভালো খবরই শুধু নয়, এতে করে প্রাকৃতিক পরিবেশের যেমন উন্নতি হবে, তেমনি কৃষকেরা পাবেন সেচ সুবিধা।
স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীর প্রতীক) জানান, নদী খননের জন্য তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশেষে সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।