তিস্তার চরাঞ্চলে ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে নিভৃত পল্লিতে গড়ে ওঠা ভায়ারহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। কাউনিয়া উপজেলার সদরাতালুক ভায়ারহাট এলাকার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলোকিত করে চলেছে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের।
মানসম্মত শিক্ষা আর মনোরম পরিবেশ থাকায় উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বিদ্যালয়টি। যাকে যোগ্য নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান।
উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সদরাতালুক গ্রামে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভায়ারহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। এখানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে চার তলা একটি ভবন হওয়ায় বিদ্যালয়টির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ।
বিদ্যালয়ে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে মুজিব কর্নার। সেখানে নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্য আছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে খেলা নানা লেখকের বই। এ ছাড়া জাতীয় চার নেতা, বীরশ্রেষ্ঠ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ছবি ও চার্ট দেয়ালে প্রদর্শন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের লেখা দেয়ালিকায় মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতার অবদান ও তাঁর কর্মময় জীবন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে গঠন করা হয়েছে ছাত্রী কল্যাণ তহবিল। যেখান থেকে প্রতিবছর অসহায় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়।মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৩৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে যে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ গড়ে তোলা যায় তার প্রমাণ ভায়ারহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।
প্রধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান সরকারিভাবে বরাদ্দ টাকা ও বিভিন্ন ব্যক্তির অনুদানে পরিপাটিভাবে বিদ্যালয়টি সাজিয়েছেন। এখানে রয়েছে সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব ও শিক্ষকদের ডাইনিং রুম।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জসিম বলেন, ‘ভায়ারহাট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়কে একটি মানসম্মত বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। এলাকার লোকজন সহযোগিতা করলে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব হবে।’
প্রধান শিক্ষক তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের তিন দিকে তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা থাকা সত্ত্বেও আমরা বেশ ভালো ছাত্রী পেয়ে থাকি। মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়ে পাশের হার প্রায় ৯২ ভাগ। আমাদের পক্ষ থেকে সব অভিভাবককে তাঁদের সন্তানের বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখার আহ্বান জানানো হয়।’