এবারের বিশ্বকাপটাই একটু অন্য রকম। আগের বিশ্বকাপগুলো হতো জুন-জুলাই মাসে, যখন ইউরোপিয়ান লিগ শেষ করে খেলোয়াড়েরা ক্লান্ত অবস্থায় বিশ্বকাপ খেলতে যেত। এবারই প্রথম লিগ চলা অবস্থায় বিশ্বকাপ হচ্ছে।
যারা খেলছে, তারা শতভাগ ফিটনেস নিয়েই বিশ্বকাপে এসেছে। যদিও চোট সমস্যা আছে কিছু, সেটা সব সময়ই থাকে। এবার দলগুলো কৌশলগত নিয়ে কাজ করার বেশি সুযোগ পাবে। ফিটনেস নিয়ে বাড়তি সময় দেওয়া লাগছে না। প্রস্তুতির কোনো অভাব নেই কারও।
যদিও মরুভূমির দেশটির বিশ্বকাপকে অনেক দেশই সহজভাবে গ্রহণ করছে না। তবে আমার মনে হয়, এশিয়ার দেশ হিসেবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে কাতার সফল একটা বিশ্বকাপই উপহার দেবে।
আর কাতার তো সব একা একা করছে না, সবকিছুই হচ্ছে প্রযুক্তি দিয়ে। এসব মিলিয়ে বলা যায়, তাদের স্বতঃস্ফূর্ততার অভাব নেই। কাতার নিজেদের ব্যর্থ প্রমাণের কোনো সুযোগই দেবে না। হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর বিষয়টি ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু এটা তাদের জন্যও সুযোগ। কে জানে হয়তো ভবিষ্যতে তারাও বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারে।
এশিয়ায় বিশ্বকাপ হওয়ায় লাতিন আমেরিকানদেরই সুযোগ দেখছি বেশি। দক্ষিণ আমেরিকাতেও আবহাওয়ায় তীব্র গরম অনুভূত হয়।এশিয়ার আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ মিল আছে। ২০০২ সালে এশিয়ার প্রথম বিশ্বকাপে কিন্তু ব্রাজিলই শিরোপা জিতেছিল। আর লাতিন অঞ্চলের ফুটবলাররা সব রকম আবহাওয়ায় অভ্যস্ত। আর এ কারণে ইউরোপিয়ানরা হয়তো পিছিয়ে থাকবে। সবচেয়ে বেশি সমর্থন অবধারিতভাবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাই পাচ্ছে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা। শেষ কয়েক বছরে তাদের যে পারফরম্যান্স, তা-ই আলাদা একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। মেসি তো আছেই, সবকিছু মিলিয়ে এই দলটা বেশ গোছানো। চাপ যদি কিছু থাকে তবে সেটা মেসির কাঁধেই থাকবে। যেহেতু শেষ বিশ্বকাপ। দেশের হয়ে কোপা, অলিম্পিক জেতার পর একটাই আক্ষেপ আছে তাঁর। তবে আমার মনে হয় সে চাপটা কাটিয়ে উঠেছে।
ব্রাজিল দল চিরাচরিতভাবেই তাদের মতো করে সুন্দর। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল। তাই বলে ইউরোপের দলগুলোও পিছিয়ে থাকবে না। জার্মানি সব সময়ই ফেবারিট। এবার নেদারল্যান্ডসও ভালো খেলছে। বেলজিয়ামেরও সুযোগ আছে। আমার সেরাদের তালিকায় আমি এই দলগুলোকেই প্রথমে রাখব। তবে কার হাতে উঠবে শিরোপা এ নিয়ে এত তাড়াতাড়ি বলার কিছু নেই। সম্ভাবনা আছে, এতটুকু বলতে পারি।
শফিকুল ইসলাম মানিক, জাতীয় দলের সাবেক কোচ