গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় ছন (শুকনো কাশফুলের গাছ) বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চরাঞ্চলের মানুষ।
গাইবান্ধা সদরের ব্রহ্মপুত্র নদের কামারজানী ঘাটে দেখা হয় ছনের কারবারি কফিল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি মোল্লারচর, চর কুচখালি, বুলবুলির চরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শুকনো কাশ খড় কিনে ঘাটে নিয়ে আসেন। পরে রাজশাহী, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারদের কাছে পাঠান। ১০ মোঠার প্রতিটি আঁটি ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি।
তিনি জানান, এ বছর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কম। চরের দুই বিঘা জমি থেকে তিনি সাত হাজার আঁটি কাশ খড় কিনেছেন। প্রতি আঁটি পাঁচ টাকা দরে কিনে এনে ১২ টাকা দরে বিক্রি করে পেয়েছেন ৮৫ হাজার টাকা।
কফিল উদ্দিন বলেন, কাশফুল নদীর চরে এমনিতেই জন্মায়। সার বা কীটনাশক কিছুই প্রয়োজন হয় না। শুধু চর থেকে কেটে আনতে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পানের বরজে এখানকার কাশ ব্যবহার হচ্ছে।
তিনি জানান, চরের কৃষকদের কাছে কাশ কিনে তিনি রাজশাহী, দিনাজপুর, বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠি, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পান চাষিদের কাছে বিক্রি করেন। পাঁচ টাকায় কেনা আঁটি বিক্রি হয় ১০-১২ টাকা পর্যন্ত দরে।
সুন্দরগঞ্জ ও পলাশবাড়ী উপজেলার পান চাষিরা জানায়, কাশবনে দু’ধরনের গাছ জন্মায়। চিকন আকারের ছোট গাছগুলো খড় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর বড় এবং মোটা আকারের গাছগুলোকে ঝাঁটি বলে। কাশবন থেকে পাওয়া খড় ও ঝাঁটি পান বরজের জন্য খুবই প্রয়োজন। খড় দিয়ে পানের বরজে ছাউনি দেওয়া হয়। পান গাছ বাঁশের শলার সঙ্গে বেঁধে ওপরে তুলতে হয়। সুতলি বা অন্য কিছু দিয়ে বাঁধলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে অল্প দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। কাশ খড় দিয়ে বাঁধলে অনেক দিন থাকে। তাড়াতাড়ি নষ্ট হয় না। এ কারণে বরজে খড় ব্যবহার করা হয়।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (শস্য) মো. কামরুজ্জামান বলেন, কাশফুল চাষের জন্য কোনো বীজ কিংবা চারা নেই। এটি প্রাকৃতিকভাবে বর্ষাকালে নদীর চরে গজায়। প্রতি বছর বর্ষায় জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে কাশফুলের গাছ প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়। কাশ কাটা হয় মধ্য নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে।