Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

দুর্নীতি দমন কমিশন: পাচারের টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ থমকে

মারুফ কিবরিয়া

দুর্নীতি দমন কমিশন: পাচারের টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ থমকে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা আবজাল হোসেন অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি শতকোটি টাকা বিদেশে পাচারও করেছেন। কারাগারে থাকা আবজাল কোন দেশে কত টাকা পাচার করেছেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অবশ্য বলা হয়েছে, পাচারের বেশির ভাগ টাকাই অস্ট্রেলিয়ায় চলে গেছে। কিন্তু পাচার হওয়া সেই টাকা ফেরত আনতে দুদকের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পি কে হালদারের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার করার অভিযোগ আছে। পাচারসহ নানা অভিযোগে এ পর্যন্ত ৪৩টি মামলা করেছে দুদক। এসবের মধ্যে কানাডায় ৮০ কোটি টাকা পাচার এবং প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা একটি মামলায় সম্প্রতি তাঁকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাচার করা অর্থ ফেরানোর বিষয়ে কার্যত কোনো তৎপরতা নেই।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর মামলা করেছিল দুদক। তবে সংস্থাটির পক্ষ থেকে সে অর্থ ফেরানোর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি তিন বছরেও।

দুদক সূত্রে জানা যায়, বিদেশে অর্থ পাচারসংক্রান্ত ঘটনার অনুসন্ধান থমকে যায় প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে দুদকের উদ্যোগও সীমাবদ্ধ থাকে শুধু মামলা আর চিঠি চালাচালিতে। দুদকের দাবি, অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্তে তাদের যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠালেও উত্তর না পাওয়ায় তদন্ত মুখ থুবড়ে পড়ে।

অর্থ পাচার প্রতিরোধ এবং পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকসচিব মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুদকের হাতে আইন অনুযায়ী ক্ষমতা কম। এই আইনের মধ্যে থেকে যতটুকু করা যায়। তা ছাড়া, বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠানো হয়। দেশেও নানা দপ্তরে তথ্য চেয়ে পত্র পাঠাই। কিন্তু সময়মতো আমরা তথ্যগুলো পাই না।’

জানা যায়, উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুদক গত এপ্রিলে দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পদ অনুসন্ধানে নামে। ছয় মাসেও এর কোনো অগ্রগতি নেই। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে অনুসন্ধানটি এগোচ্ছে না।
দুদকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে দুদকের তেমন কিছুই করার থাকে না। দেশের অভ্যন্তরে চিঠি পাঠিয়েই বসে থাকতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়। তবে সে দেশের সঙ্গে চুক্তি না থাকায় কোনো তথ্য পায় না দুদক।

অপর এক কর্মকর্তা বলেন, দুদক যেটা করতে পারে তাহলো—সংস্থাটি সরাসরি যেকোনো দেশে মিশনে যেতে পারে। সেখানে গেলেই সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে বসে কাজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুদকের সদিচ্ছার প্রয়োজন। শুধু অর্থ পাচার রোধ ও সেই অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আইনের সীমাবদ্ধতা থাকার কথা বললেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।

দুদকসচিব মো. মাহবুব হোসেন গত বছরের নভেম্বরে জানিয়েছিলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে আটটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করা হবে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে শুধু নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক বছর কেটে গেলেও দুদক কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেনি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার প্রতিরোধে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো থাকলেও অর্থ পাচার ঠেকাতে আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রয়োগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায় না। যাঁরা অর্থ পাচারকারী, তাঁদের সিংহভাগই প্রভাবশালী বলে তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। অর্থ পাচারের মতো অপরাধ একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়ে গেছে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ