মিঠাপুকুরে যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন আর প্রচারযন্ত্রের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধ হলেও যত্রতত্র তার ব্যবহার চলছে। সেই সঙ্গে মাইক ব্যবহারেও মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলা সদরে সকাল থেকে মাইকে প্রচার শুরু করা হয় এবং তা চলে অনেক রাত পর্যন্ত। ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চিকিৎসকের চেম্বারের প্রচার, বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রি, সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানাতে এই মাইক ব্যবহৃত হচ্ছে।
নিয়ম অনুযায়ী অফিস, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকায় যখন-তখন উচ্চ শব্দে মাইক ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু উপজেলায় এ ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কম মাত্রার মাইকে প্রচার করা হলে শব্দ দূষণ এড়ানো সম্ভব। আর প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রোলিক হর্ন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, শব্দের মাত্রার এককের নাম ডিবি অর্থাৎ ডেসিবেল। মানুষ সাধারণত ৩৫ থেকে ৪০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ সহ্য করতে পারে। ৪৫ ডেসিবেলের শব্দ শুনলেই মানুষ ঘুমাতে পারে না। আর ৬০ থেকে ৮০ ডেসিবেলের শব্দে শ্রবণ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং ৮৫ থেকে ১২০ ডেসিবেলে কানে ব্যথা অনুভূত হয়।
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এম এ হালিম লাবলু জানান, উচ্চ মাত্রার শব্দে বধিরতা, ফুসফুসের ক্ষতি ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এ ছাড়া শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। উচ্চ মাত্রার শব্দ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই।
প্রচারের জন্য মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে মত দেন উপজেলা সদর (দুর্গাপুর) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তালুকদার।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সিদ্দিক হোসেন জানান, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর যেকোনো বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, উচ্চ শব্দে মাইকে প্রচার করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।