রফিকুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ভুঁয়াগাতী-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের তাড়াশ-ভুঁয়াগাতী অংশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কিছু তালগাছ। পরিকল্পিতভাবে ১০ ফুট পর পর লাগানো ওই তালগাছগুলো একসময় মানুষের নজর কাড়ত। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অযত্ন আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ওই ১৭ কিলোমিটার সড়কের অনেক তালগাছ মরে গেছে। এতে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে তাল সড়কটি।
এলাকাবাসীর দাবি, মরে যাওয়া কিংবা কেটে ফেলা গাছের জায়গায় নতুন করে গাছ লাগিয়ে সড়কটির সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রাখা হোক। সেই সঙ্গে যে গাছগুলো এখনো আছে, তা রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।
তাড়াশ পৌর এলাকার ভাদাশ গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সত্তরোর্ধ্ব আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৯৭৫-৭৭ সাল মেয়াদে তাড়াশের মাধাইনগর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান এলজিইডির ১৭ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে প্রায় ১৪ হাজার তালবীজ বপন করেন। তালগাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিনি গ্রাম পুলিশদের দায়িত্ব দেন। কিন্তু গত ৫-৭ বছরে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে কিছু তালগাছ মরে গেছে। পাশাপাশি কিছু অসাধু প্রকৃতির মানুষ সবার অগোচরে তালগাছ কেটে ফেলায় ওই সড়কের সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
আব্দুস সাত্তার আরও বলেন, তালগাছগুলোর কারণে স্থানীয় লোকজন ওই সড়কের নামকরণ করেছেন ‘তাল সড়ক’। আর এ থেকেই সড়কটি পরিচিত হয়ে উঠেছে তাড়াশের ‘তাল সড়ক’ নামে।
তাল সড়কে নিয়মিত সকাল-বিকেল হাঁটতে আসা মাধাইনগর ইউনিয়নের ধানকন্ঠি গ্রামের মো. সাইদুর রহমান বলেন, ওই সড়কের দুধারে গাছগুলো বেড়ে ওঠায় সড়কটি দেখতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু বর্তমানে অনেক তালগাছ মরে যাওয়ায় এবং কিছু গাছ কেটে ফেলার কারণে আগের মতো এখন আর তেমন ভালো দেখায় না সড়কটি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যান থাকাকালে প্রায় ১৪ হাজার তালবীজ আমার হাতেই বপন করা হয়। কিন্তু বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক গাছ বিলীন হয়ে গেছে। তবে এখনো যে গাছগুলো রয়েছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় প্রশাসনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, সড়কটিতে তালগাছগুলোর অনেক বয়স হওয়ায় দু-একটি গাছ মরে গেছে। বর্তমানে তালগাছের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার। বন বিভাগের লোকজন এই তালগাছগুলো সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন।