বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
দিনমজুর সাইফুল ইসলাম ও গৃহিণী জরিনা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে ছোট মাহমুদুন নবী। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে এই ছেলে সংসারের অভাব গোছাবেন—এমনই স্বপ্ন ছিল মা-বাবার। কিন্তু এখন সেই ছেলেকেই বাঁচাতে রাস্তায় নামতে হয়েছে তাঁদের।
হতভাগা এই মা-বাবার বাড়ি বদরগঞ্জ পৌর শহরের শাহাপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। সম্প্রতি পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে দেখা মেলে তাঁদের। তাঁরা একটি দানবাক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাক্সে চোখে পড়ে যুবক মাহমুদুন নবীর ছবি। ছবির নিচে লেখা, ‘আমার ব্লাড ক্যানসার, আমাকে সাহায্য করুন।’
এই দম্পতি জানান, ২৭ জুন তাঁদের সন্তানের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। প্রথমে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর তাঁকে ৯ আগস্ট উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর সঠিক চিকিৎসা করতে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার প্রয়োজন।
বাবা সাইফুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার পাঁচ শতক বাড়ির ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। ইতিমধ্যে সন্তানের চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে বাড়ির আসবাবসহ গরু-ছাগল বিক্রি করে দিয়েছি। এখন থাকার আশ্রয়টুকু ছাড়া আর কিছুই নেই। আত্মীয়স্বজন ও ছেলের বন্ধুরা সাহায্য তুলে প্রায় ৫ লাখ টাকা দিয়েছে। চিকিৎসা করাতে গিয়ে সেই টাকা শেষ হয়ে গেছে। এখন আরও ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা পাব কোথায়? আমার মেধাবী সন্তান কি টাকার জন্য হারিয়ে যাবে?’
মা জরিনা বলেন, ‘লজ্জা ফেলে সন্তানকে বাঁচানোর আকুতি নিয়ে আজ ভিক্ষাবৃত্তিতে মাঠে নেমেছি। দেশে অনেক বিত্তবান মানুষ আছেন, তাঁরা একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে আমার সন্তান সুস্থ হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারবে।’