নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নিম্নচাপের কারণে ঢাকার আকাশ সারা দিনই ছিল রোদহীন। তাতে এতটুকুও ছেদ পড়েনি নবান্ন উৎসবের। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলা সেজে ওঠে উৎসবের রঙিন সাজে। যন্ত্রসংগীতের মূর্ছনায় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তারপরই মঞ্চে ওঠে এক ঝাঁক শিশু। ওরা সমবেত কণ্ঠে গাইল—‘আবার জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা অঘ্রানে নবান্নে উৎসবে...।’ ২৫তম নবান্ন উৎসব ১৪৩০-এর দুই দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় এভাবেই।
প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে জাতীয় নবান্ন উৎসব উদ্যাপন পরিষদ। উদ্বোধনী আয়োজনে গতকাল সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘এ উৎসব সারা দেশের। বিশেষ করে গ্রামে নতুন ফসল তোলার আনন্দে এর আয়োজন করা হয়। এখন তেমন ঘটা করে আয়োজন হয়তো হয় না। তবে প্রায় প্রতিটি ঘরেই নতুন ধানের পিঠা তৈরি হয়। আমি প্রস্তাব করব, প্রতিটি জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ে এটিকে জাতীয় উৎসব হিসেবে পালন করা যায় কি না।’
নবান্নে নিজের ছেলেবেলার অভিজ্ঞতার কথা শোনান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি মায়ের সঙ্গে পুলি পিঠা বানাতাম। ঢেঁকিতে চাল কুটতেও পারতাম। সেই মায়াবী দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। এটিকে যাতে জাতীয় উৎসব করা যায়, সে চেষ্টা করব।’
এবারের নবান্ন উৎসবটি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী বুলবুল মহলানবিশকে উৎসর্গ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পর্ষদের সভাপতি লায়লা হাসানের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান সুজা। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগীতা ইমাম ও আফরোজা হাসান শিল্পী।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর নাচ, গান ও আবৃত্তিতে মেতে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। এ সময় দলীয় সংগীত পরিবেশন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, পঞ্চায়েত, সুর নন্দন ও নৃত্য তরী। একক সংগীত পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, প্রিয়াংকা গোপ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, আবুদা রহমান সেতু প্রমুখ। দলীয় নৃত্যে অংশ নেন লায়লা হাসান, দীপা খন্দকার, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি, সেলিনা হক, ডলি ইকবাল, সাদিয়া ইসলাম মৌ প্রমুখ। নাচে অংশগ্রহণ করে স্পন্দন, ভাবনা, কথক নৃত্য সম্প্রদায়, নান্দনিক নৃত্য সংগঠন, নৃত্যম ইত্যাদি। আবৃত্তি করেন আশরাফুল আলম, শাহাদাত হোসেন নিপু, নায়লা তারান্নুম কাকলি, ফয়জুল আলম পাপ্পউ, নিমাই মণ্ডল প্রমুখ।