ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় আগাম জাতের রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকেরা পাকা ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। ধান তোলার পর তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন রবিশস্যের। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, আগাম জাতের ধান চাষে কৃষকেরা লাভবান হবেন। ধান ঘরে ওঠার পর সরিষা, ভুট্টা ও গমের আবাদে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
ধোবাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার ১৩ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও উফশী জাতের রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ২ হাজার ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। হাইব্রিড জাতের আগাম রোপা আমন ১০৮ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে, উফশী জাতের রোপা আমন ১১৫ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ঘরে তুলতে পারেন কৃষকেরা। জমি চাষ, মজুরি, সেচ, বালাইনাশক, কর্তন, মাড়াই ও পরিবহন বাবদ হাইব্রিডে গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ৭ হাজার ৭০০ টাকা এবং উফশীতে ৭ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় হয়।
কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আগাম জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ ধান পাবেন বলে আশা করছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া বাজারে ধান ও গোখাদ্য হিসেবে খড়ের দাম ভালো থাকায় বিঘাপ্রতি ১৩-১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে। এতে প্রায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন চাষিরা।
চার ফসলি এসব জমির আগাম জাতের ধান কাটা শেষে এই অঞ্চলের কৃষকেরা কলাই, সরিষা, ভুট্টা, আলু শস্যে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন বলেও জানান কৃষকেরা।
উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের ফুটকাই গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার ধানের খেতে তেমন একটা কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়নি। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে। এর পর তাঁরা রবিশস্য উৎপাদনে প্রস্তুতি নেবেন।
বাঘবেড় ইউনিয়ন উপকৃষি কর্মকর্তা নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘বর্তমান বাজারে ধানের দামের চেয়ে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা খড়। প্রতি বিঘায় খড় বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। ফলে আগাম জাতের রোপা আমন চাষে লাভবান হওয়ায় চাষিরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ ছাড়া এই সময় কৃষিশ্রমিকের সংকট থাকে না।’
ধোবাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. গোলাম সরোয়ার তুষার বলেন, উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের ধান চাষে কৃষকেরা লাভবান হন। সেজন্য তাঁদের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। করোনা মহামারিতে আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে এই আগাম ফসল। ধারণা করা হচ্ছে, আগাম ধান, সরিষা, ভুট্টা ও গমের আবাদ বাড়বে। তা ছাড়া, এখানকার কিছু নির্দিষ্ট এলাকার মাটি আগাম জাতের ধান, সরিষা, গম ও ভুট্ট চাষের উপযোগী।