খায়রুল বাসার নির্ঝর
‘রাত জাগা ফুল’ আপনার পরিচালিত প্রথম ছবি। ছবি বানানোর অভিজ্ঞতা কেমন?
খুবই টাফ। কারণ আমরা যেভাবে ভাবি, দুম করে বানিয়ে ফেললাম—এভাবে ছবি হয় না। আমরা নাটক দেখি আই লেভেলে। আর ছবি দেখি বড় পর্দায়। এ ছবি বানাতে গিয়ে আমরা মাথায় রেখেছি, হলে কীভাবে দেখবে দর্শক। সিনেমা বানানোর প্রক্রিয়াটাও টাফ। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা জরুরি।
প্রথম ছবিতে নির্মাতারা সাধারণত বড় তারকা নিতে চান। আপনি নতুনদের নিয়ে ঝুঁকি নিলেন কেন?
ছবির গল্পই আমার হিরো। গল্প অনুযায়ী যাঁকে উপযুক্ত মনে হয়েছে, তাঁকে নিয়েছি। আমার মনে হয়েছে, নতুনরা অনেক ডেডিকেট হয়ে কাজ করেন। সেই সঙ্গে আবুল হায়াত, দিলারা জামান, শর্মিলী আহমেদ, ফজলুর রহমান বাবু, মাজনুন মিজান, জয়রাজদের মতো অভিজ্ঞ শিল্পীদের নিয়েছি। ছবিতে গান গেয়েছেন মমতাজ, হৃদয় খান, নচিকেতা।
এ ছবিতে পরিচালনার পাশাপাশি নিজেও অভিনয় করেছেন। নিজের পরিচালনায় অভিনয় করা কতখানি চাপের?
বেশ চাপের। একই সঙ্গে পরিচালনা ও অভিনয় করাটা কষ্টসাধ্য। তবে আমার ছবির ক্ষেত্রে যেটা সুবিধা হয়েছে, সারা দিনে দুই-তিনটি সিন করেছি। ফলে সময় পাওয়া গেছে।
ছবি মুক্তির দিন হিসেবে বছরের শেষ দিনটি বেছে নেওয়ার কোনো কারণ আছে?
ইচ্ছে করে এ দিনটি বেছে নিয়েছি। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর ছবির শুটিং শুরু করেছি। চেয়েছিলাম কাজ মার্চ মাসে মুক্তি দিতে। কিন্তু করোনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। তাই ১ ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই ছবিটি মুক্তি দিতে চেয়েছি।
বাংলা ছবির অবস্থা এখন ততটা ভালো নয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে দর্শককে হলে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কেমন ছবি হওয়া উচিত বলে মনে হয়?
আমি যেটা বানিয়েছি, আমার মনে হয় এ ধরনের ছবির মধ্যেই থাকা উচিত এখন। আমরা তো কোনো না কোনো সমস্যার মধ্য দিয়েই গিয়েছি সব সময়। একটা সময় অশ্লীলতা ছিল, আবার মহামারিতে স্থবিরতা তৈরি হলো, কিন্তু জীবন তো থেমে নেই। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এল। সেখানেও গল্পের ভিন্নতা, চরিত্রের বৈচিত্র্য—এসব নিয়ে কাজ হচ্ছে। নতুনত্ব এসেছে। আমার ছবিটিও দর্শক যখন দেখবেন, নতুনত্ব পাবেন।
অনেক বছর ধরেই আপনি অভিনয় করছেন। দীর্ঘ সময়ে হাতে গোনা কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রে আপনাকে সেভাবে পাওয়া গেল না কেন?
আসলে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার জন্য কেউ কিছুই করেননি। সবকিছু আমার নিজেকেই করতে হয়েছে। আমার জন্য দেবদূতের মতো একজন বড় নির্মাতা এগিয়ে আসেননি। গিয়াসউদ্দীন সেলিম, অমিতাভ রেজা, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, শিহাব শাহীন বা সালাউদ্দীন লাভলু—তাঁরা কেউ কোনো দিন মীর সাব্বিরকে নিয়ে ছবি বানানোর কথা ভাবেননি। এ জন্য আমি ভেবেছি, নিজের জন্য আমাকেই কাজটি করতে হবে।
নাটকের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়েছে?
নাটকের ক্ষেত্রে যদি বলি, আমার যে নাটকগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছে, সেগুলোও কোনো না কোনোভাবে হয়তো আমার গল্প, নয়তো আমার পরিচালনা। অন্যরা আমার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নাটকে নিয়েছেন তাঁদের স্বার্থে।