চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে রয়েছে সাতটি ডাস্টবিন। এই সাতটি বিনে প্রতি মাসে সাতটি পলিথিন দেওয়ার কথা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের। বিনিময়ে প্রতি মাসে এ পলিথিনের জন্য পাবেন ১ হাজার ৯৮৫ টাকা। চট্টগ্রাম ও ঢাকা মিলে প্রায় ১৫০টি স্টেশন রয়েছে। এর বিপরীতে ৭৫০টি ডাস্টবিনের একটি করে পলিথিন সরবরাহ করে মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা করে তুলে নিচ্ছেন ঠিকাদার। কিন্তু বাস্তবে ডাস্টবিনের বিনে কোনো পলিথিন সরবরাহ করা হয় না।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সাত বছর ধরে এই ঠিকাদার কাজটি পেয়ে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্টেশনের ডাস্টবিনে পলিথিন সরবরাহ ও সার্ভিসিং এবং সংরক্ষণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার জন্য রেলওয়ে
পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজারের সঙ্গে ওয়াহদিকা সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দুই বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়। নিয়ম অনুযায়ী ২০১৮ সালে চুক্তিটি ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু টেন্ডার আহ্বান না করে একই প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দেয় বাণিজ্যিক বিভাগ।
চুক্তিতে বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে প্রতিটি পলিথিন সরবরাহ ও সার্ভিসিংয়ের বিনিময়ে ১ হাজার ৯৮৫ টাকা দেবে রেলওয়ে। ডাস্টবিনে পলিথিন সরবরাহ ও সার্ভিসিং আনুপাতিক হারে বাড়তে পারে। অর্থাৎ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডাস্টবিন বাড়িয়ে পলিথিন বেশি সরবরাহ করলে, ওই অনুযায়ী টাকা পাবেন। সে ক্ষেত্রে স্টেশন মাস্টার বা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এটির তদারকি করবেন। কিন্তু বাস্তবে তদারকি করা হয় না। ঠিকাদার প্রতি মাসে যা বিল করেন, তাতে সই দিয়ে কাজ সারেন স্টেশন মাস্টার ও বাণিজ্যিক কর্মকর্তারা। এ কাজের জন্য দুই বছর পরপর নতুন টেন্ডার আহ্বান করার নিয়ম থাকলেও সাত বছর ধরে একটি প্রতিষ্ঠানই কোনো টেন্ডার আহ্বান না করে নবায়ন মাধ্যমে রেলওয়ের বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম স্টেশন, বিমানবন্দর স্টেশন, ষোলশহর স্টেশনসহ প্রায় ১০টি স্টেশনে ডাস্টবিনে কোনো পলিথিন সরবরাহ করা হয় না। ডাস্টবিনে পলিথিন ছাড়াই ময়লা ফেলতে দেখা গেছে যাত্রীদের। যাত্রীরা যে যারমতো করে খাওয়া শেষে ময়লা ফেলে চলে যাচ্ছেন। ওয়াহদিকা সার্ভিসেসের কোনো কর্মচারীকে ডাস্টবিনে পলিথিন সরবরাহ করতে দেখা যায়নি। এমনকি ডাস্টবিনে ময়লা পূর্ণ হলেও তদারকি করতে দেখা যায়নি।
স্টেশনের দায়িত্বরত কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্টেশনে ডাস্টবিন থাকলেও ময়লা যথাসময়ে সংগ্রহ করা হয় না।
এ বিষয়ে ঠিকাদার ওয়ালিউর রহমানের মুঠোফোনে বারবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’