Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

স্নাতকোত্তর কুমার ব্রোজেশ

আজিজুর রহমান, চৌগাছা

স্নাতকোত্তর কুমার ব্রোজেশ

যশোরের চৌগাছার ব্রোজেশ পাল (৩৪)। পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে কুমার তিনি। তবে অন্য আর ১০ জনের মতো নন।

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ থেকে দর্শন বিষয়ের ওপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করার পর পৈতৃক পেশায় এসেছেন তিনি। চৌগাছা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইছাপুর পাল পাড়ার বাসিন্দা ব্রোজেশ গোবিন্দ পালের ছেলে।

কুমারদের জীবন চিত্র নিয়ে প্রতিবেদনের উদ্দেশে সরেজমিনে ইছাপুর পাল পাড়ায় গেলে দেখা হয় তৈরি মাটির পাটের (গ্রামের টয়লেট তৈরির মাটির রিং) কাজে ব্যস্ত ব্রোজেশকে। কিছুটা দূরে ব্রোজেশের স্ত্রীও খেজুর রস সংগ্রহের কলসসহ (ভাঁড়) মাটির তৈরি বিভিন্ন পাত্র দেখাশোনার করছেন।

বিনয়ী যুবক ব্রোজেশের সঙ্গে কথার শুরুতে তিনি যে শিক্ষার সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী, এমন কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। কয়েক বছর ধরে তিনি কুমারের কাজ করছেন বলতেই খটকা লাগে। পৈতৃক পেশা অথচ বলছেন কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন! ব্রোজেশের উত্তরে এবারে চমকে ওঠার অবস্থা। কাজের ফাঁকেই ব্রোজেশ বলতে থাকেন, ‘ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় মরোযোগী ছিলাম। বাবা-দাদা কুমরের কাজ করেই আমার পড়ালেখা চালাতেন। এখন সেই বাপ–দাদার পেশাতেই ফিরে এলাম।’

ব্রোজেশ জানালেন, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বিভাগের ফল নিয়ে পাস করেছি। এর আগে সেখান থেকে চার বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর করেছি দর্শন বিষয় নিয়েই। এইচএসসি চৌগাছার এবিসিডি কলেজ থেকে ৩.৭০ সিজিপিএ নিয়ে। ২০০৩ সালে এসএসসি চৌগাছার পাতিবিলা হাজী শাহজান আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে।

ব্রোজেশ বলেন, ‘এমএ পাস করার পর চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার মতো গরিব কুমারের ছেলেকে কে চাকরি দেবে? বাবার অভাবের সংসারে লেখাপড়া শেষ করেছি এই তো বড়! টাকা দিতে পারিনি, যোগাযোগের মাধ্যম নেই। তাই কোনো স্কুল-কলেজে চাকরিও পাইনি। চাকরি প্রচেষ্টার সঙ্গে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন কাজ করি। এখন সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে।’

কুমার ব্রোজেশ পাল বলেন, ‘বছর সাতেক আগে বিয়ে করি। পাঁচ বছর বয়সী এক কন্যা আছে আমার। কোম্পানির চাকরিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। পরে সেই চাকরি ছেড়ে গত তিন থেকে সাড়ে তিন বছর ধরে বাবা-দাদাদের পেশাতেই চলে এসেছি। কুমারের কাজ করে কোম্পানি চাকরির চেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে আছি। এখানে নিজের সঙ্গে স্ত্রীও কাজ করতে পারেন। দুজনের আয়ে সংসার চলে যায়।’

ব্রোজেশ পাল বলেন, ‘অন্য তিন ভাই গৌর চন্দ্র পাল, সুশান্ত পাল, প্রভাত পাল ও তাঁদের স্ত্রীরা এক সঙ্গেই আছেন। সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করি। আমরা মাটির বিভিন্ন পাত্র তৈরি করি। এখান থেকেই পাইকারি ও খুচরাতে বিক্রি হয়ে যায়। আগের মতো গ্রামে গ্রামে নিয়ে যাওয়া লাগে না। মিথ্যা বলব না, এটা করেই তো সংসার চালাচ্ছি। আগের থেকে ভালোই চলছে। তবে গত দুই বছর করোনার কারণে কিছুটা হলেও কষ্ট হয়ে গেছে। তবে এই সময়ে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনি।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আলাদাভাবে কামারদের জন্য কোনো প্রণোদনার বরাদ্দ আসেনি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ