বৈশাখী উৎসব ভাতা ও ঈদের বোনাস পাননি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার প্রায় পাঁচ শ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, চলতি বছরের বৈশাখী ভাতা পাননি এখনো। না পাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে ঈদের বোনাসও। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উৎসব ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে এ উপজেলার নাম না ওঠায় এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পাকুন্দিয়া শাখা। অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টির সুরাহা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন রয়েছে। এখনো এপ্রিল মাসের বেতন তাঁরা পাননি। এমনকি বৈশাখী ভাতাও এখনো পাননি। দুয়েক দিনের মধ্যে মাসিক সম্মানী ভাতা পাওয়ার আশা থাকলেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ঈদের বোনাস পাওয়া নিয়ে। ব্যাংকের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পেরেছেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উৎসব ভাতাপ্রাপ্তদের তালিকায় পাকুন্দিয়া উপজেলার নাম উঠেনি। জেলার অন্যান্য উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানী ভাতা ও উৎসব বোনাস ইতিমধ্যে পেয়ে গেছেন।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড পাকুন্দিয়া শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৪৭৪ বীর মুক্তিযোদ্ধা এখান থেকে নিয়মিত সম্মানী ভাতাসহ অন্যান্য উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। এপ্রিল মাসের সম্মানী ভাতার বরাদ্দ আজকালের মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উৎসব ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে এ উপজেলার নাম আসেনি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন, নুর উদ্দিন, আলাউদ্দিন, বাহার উদ্দিন ও ফজলুল হক বলেন, ‘ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি। এখনো সম্মানী ভাতা ও ঈদের বোনাস পাইনি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। শুনেছি ২-১ দিনের মধ্যে সম্মানী ভাতা পাব। তবে উৎসব বোনাস ঈদের আগে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এতে অনেক মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মিছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘দুয়ারে ঈদ। কিন্তু এ উপজেলার ৫০০ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা উৎসব ভাতা পাচ্ছেন না। এতে অনেক পরিবার ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার জন্য ঊর্ধ্বতন সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের পাকুন্দিয়া শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ও উৎসব ভাতার বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আজকালের মধ্যে সম্মানী ভাতা পাওয়া যাবে। তবে উৎসব ভাতার বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁরা ওয়েবসাইটে দেখতে বলেন। কিন্তু ওয়েবসাইটে পাকুন্দিয়া উপজেলার নাম আসেনি। পরে বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসব ভাতা না পাওয়ার বিষয়টি গতকাল সকালে জানতে পেরেছি। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সুরাহা হবে।’