বদরগঞ্জে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখি কাহিল হয়ে পড়েছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার ৪০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। তাঁরা শীতবস্ত্রের অভাবে প্রচণ্ড ঠান্ডায় দিন পার করছেন।
গত মঙ্গলবার ঠান্ডার মধ্যে পৌর শহরে রিকশা নিয়ে বের হন শাখারি পাড়া গ্রামের হরিশংকর রায়। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডাত হাত-পাও কোঁকড়া নাগোচে। কিন্তু হামার গরিবের কি ঠান্ডা দেখিলে চলবে? পেট তো খায়! দুই ছইল আর স্ত্রীকে নিয়ে খাইতে প্রতিদিন খরচ নাগে ৩০০ টাকার। তাই ঠান্ডাত রিকশা নিয়া খুব সকালোত বাইর হচু। শহরোত প্যাছেন্দার (যাত্রী) নাই। এখান দুপুর ২টা বাজোটে, কামাই করনু মাত্র ৪০ টাকা।’
পৌর শহরের হাসপাতাল পাড়ার হাসান আলী জানান, মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও এই ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে।
শাহাপুর গ্রামে এক নারীর কোলে চাদর দিয়ে ঢাকা একটি ছাগলের বাচ্চা দেখা যায়। তিনি জানান, ছাগলের বাচ্চাটি ঠান্ডায় কাঁপছিল। তাই এটিকে চাদর দিয়ে ডেকে নিয়েছেন।
ঠান্ডা থেকে বাঁচতে মানুষ ফুটপাতে শীতবস্ত্র কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পোশাকের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। দরিদ্র মানুষজন শীতবস্ত্র কিনতে না পারায় পরিবার নিয়ে জবুথবু হয়ে পড়েছেন। আমরুলবাড়ি গ্রামের বুলবুলি বেগম বলেন, ‘মনে হওচে আকাশ উন্দাও হইচে। খুব ঠান্ডা নাগচে। কিন্তু কেউ কম্বল দেয় না।’
উপজেলায় গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩ হাজার কম্বল সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতে গরিব মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার পিচ কম্বল গরিবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। কম্বল কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। অচিরেই এই টাকায় কম্বল কিনে বিতরণ করা হবে।’