কুষ্টিয়ার খোকসায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার রাতেই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলা ও ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। একই সময়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী। গত বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর গ্রামের কলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় কমপক্ষে ১৬টি বসত বাড়ি ও চারটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে অসংখ্য ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালালেও পুলিশ আসেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন কলপাড়া এলাকায় দেখা যায়, প্রায় ১৬টি বসতবাড়ি ও চারটি মুদি ও চায়ের দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আতঙ্কে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে গেছে। মহিলা ও শিশুরা রয়েছে আতঙ্কে। এ সময় ঘটনাস্থলে আগ্নেয়াস্ত্রের খোল পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওসমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ওহিদুল ইসলাম ডাবলু ও সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াজেদের নেতৃত্বে সামিরুল, পাপ্পু, হেলাল, ময়েনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মাস্তান দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হঠাৎ গুলির বিকট শব্দে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায় এবং সন্ত্রাসী তাণ্ডব দেখে তাঁরা পালিয়ে যান। পরে সন্ত্রাসীরা তাঁদের প্রায় ১৬টি বসতবাড়ি ও চারটি দোকানে ভাঙচুর চালায় এবং লাখ লাখ টাকা ও সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
গ্রামের বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, রাত আনুমানিক ১১টার আমার বাড়িতে একদল সন্ত্রাসী হামলা করে। ওই সময় আমি প্রাণ বাঁচাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে যাই। পরে বাড়িতে ফিরে এসে দেখি আমার বাড়ির সকল জিনিস ভাঙচুর করে নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে ওই সন্ত্রাসীরা। তিনি আরও বলেন, আমার বাড়িটি সরকারের বরাদ্দ দেওয়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের।
এ বিষয়ে মাজেদ বিশ্বাস বলেন, ডাবলু চেয়ারম্যানের আদেশে ওয়াজেদ মেম্বারের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িসহ প্রায় ২০ জন সমর্থকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করেন। আতঙ্ক সৃষ্টি করতে অসংখ্য ফাঁকা গুলি ছোড়ে তাঁরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘পনেরো বছর আগে মেম্বার ছিলাম। এবার আবার দাঁড়াব। আমি বিএনপি সমর্থন করি। দুই মাস আগে জহুরুল মেম্বারের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। গতকাল (বুধবার) রাতে গুলির শব্দ শুনেছি। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমার ছেলে পাপ্পু হয়তো ছিল।’