Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

আগ্রহ বাড়ছে পরিবার পরিকল্পনায়

শাকিলা ববি, সিলেট

আগ্রহ বাড়ছে পরিবার পরিকল্পনায়

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বামৈ ইউনিয়নের আব্দুল আউয়াল মিয়ার বাড়িতে ১৩ ডিসেম্বর বামৈ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একটি উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে গর্ভকালীন সেবা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহের কুফল, পরিবার পরিকল্পনা ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের গুরুত্ব, জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে সক্ষম দম্পতিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। পাশাপাশি ছোট পরিবারের সুবিধা এবং বড় পরিবারের অসুবিধা নিয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠকে জন্মনিয়ন্ত্রণের একই পদ্ধতি দীর্ঘদিন ব্যবহার না করে তা পরিবর্তনের বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আতিকুর রহমান তালুকদার।

আতিকুর রহমান তালুকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনায় নারী-পুরুষ সবাই এখন অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ২০১২ সালে গ্রামে যখন আমরা স্যাটেলাইট ক্লিনিকে যেতাম, তখন তিন-চারজন নারী থাকতেন সেবা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এখন একেকটি স্যাটেলাইট ক্লিনিকে ৩০-৪০ জন নারী আসেন সেবা নিতে।

মৌলভীবাজার জেলার আগনশি গ্রামের জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন, ‘আমার দেড় বছরের একটি সন্তান আছে। আমার শাশুড়ি আরেকটি বাচ্চা নিতে বললেও আমি নিচ্ছি না।

কারণ, পরিবার পরিকল্পনার আপাদের কাছ থেকে জেনেছি ছোট-বড় পরিবারের সুবিধা-অসুবিধা। তাঁরা আমাকে বলেছেন, পরপর দুটি বাচ্চা নেওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা আমার নেই। আমি আমার স্বামীকে বুঝিয়ে বলেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন আর বাচ্চা নেব না।’

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পাঠানটুলা গ্রামের দুই সন্তানের জননী লাইজু আক্তার বলেন, ‘আমার দুটি সন্তান। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অধিক বাচ্চা জন্ম দিয়ে সঠিকভাবে লালনপালন করা অনেক কষ্টকর। তাই এখন আর বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা নেই।’

সিলেট বিভাগের পরিবার পরিকল্পনাসম্পর্কিত নানা তথ্য জানতে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বিভাগের চার জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিদর্শন করেন এই প্রতিবেদক। সেসব এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এলাকার পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের চিত্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্যমতে, সিলেট বিভাগের চার জেলার শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে সচেতনতা বেড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র, স্যাটেলাইট ক্লিনিক, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ গ্রামে-শহরে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও কাজ করছে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে।

চার জেলার মাঠপর্যায়ে কর্মরত বেশ কয়েকজন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুরুটা সহজ ছিল না। ধর্মীয় প্রভাব ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, হাওরাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থার সমস্যাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজ করতে হয়েছে মাঠকর্মীদের। প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটের বেশির ভাগ প্রবাসীই পরিবার পরিকল্পনায় আগ্রহী হন না। এত সব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও গত দুই দশকে সিলেটে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার (সিপিআর) ২০.১ শতাংশ ( ১৯৯৬-৯৭) থেকে ৫৫.৪ শতাংশে (২০১৭-১৮) উন্নীত হয়েছে।

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার করাব ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক সনজিত সিনহা বাপ্পী বলেন, পরিবার পরিকল্পনার বিষয়ে এখন শহর-গ্রামে মোটামুটি সবাই অবগত। সচেতনতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। গ্রামের মানুষজনও এখন পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৫/৬ নম্বর বাজার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবারকল্যাণ পরিদর্শক বিশাতা কালাম হ্যাপী বলেন, ‘অধিক বাচ্চা বা অল্প বয়েসে বাচ্চা নিলে একজন নারীর কী ধরনের শারীরিক ক্ষতি হয় তা বুঝিয়েছি, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছি।’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক কুতুব আহমদ বলেন, ‘এখানকার ইতিবাচক অর্জন উল্লেখযোগ্য এবং ব্যাপক। বিডিএইচএসের জরিপ অনুযায়ী সিলেটের সিপিআর হারের দূরত্ব জাতীয় থেকে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। যে ৭ শতাংশ গ্যাপ আছে, সেটাও আমরা অতিক্রমের চেষ্টা করছি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ