দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। যে ১৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে তার ধারণক্ষমতা অপ্রতুল ও বসবাসের জন্য অনুপযোগী। এ ছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলে উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।
বেসরকারি সংস্থা ‘লিডার্স’ পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে বলা হয় সাতক্ষীরার আশাশুনির শ্রীউলাতে ৫ শতাংশ, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে ১৭ শতাংশ এবং কয়রার বেতকাশি ইউনিয়নে ৩৬ শতাংশ মানুষ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করার সুযোগ পায়। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, নারী বিশেষ করে গর্ভবতী মা এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য এসব আশ্রয়কেন্দ্র মোটেও উপযুক্ত নয়।
জরিপে আরও বলা হয়েছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাদ্য, নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের সময় দুর্গতদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসার ব্যবস্থাও নেই। আর এ কারণে উপকূলের মানুষেরা প্রবল দুর্যোগের মধ্যেও আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে বাড়িতেই থাকছেন। এর ফলে তাঁরা ঘূর্ণিঝড়ের সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার সাতক্ষীরার সাংবাদিক ঐক্য মিলনায়তনে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অধিপরামর্শ ফোরাম’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ফোরামের সদস্যসচিব মাধব চন্দ্র দত্ত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সরকার আরও বেশ কিছু ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আর যেসব আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে সেখানকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং আশ্রয় গ্রহণকারীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধপত্র, খাবার পানি এবং খাদ্য সামগ্রীর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সাতক্ষীরা থেকে মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। দুর্যোগে তাঁদের ঘরবাড়ি, জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।
এ সময় ফোরাম নেতা অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির আইনজীবী ফাহিমুল হক কিসলু, লিডার্সের পরিতোষ কুমার বৈদ্য এবং কৌশিক কুমার উপস্থিত ছিলেন।