নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের সালথায় হামলার অভিযোগে করা মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ হামলায় বাদীর একটি বরফ কল ও চারটি বসতঘর ভাঙচুর করে ফ্রিজ, টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মামলার বাদী আহত মতিউর রহমান (মতি মেম্বার) বলেন, গত জানুয়ারি মাসে তাঁর বাড়িতে হামলা করে মুক্ত মেম্বার (ইউপি সদস্য) ও তাঁর সহযোগীরা। সেই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মুক্ত ও তাঁর চার ভাইসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। মামলাটি তুলে নিতে আসামিরা তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দেওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি উপজেলার বিনোকদিয়ায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। পথে কাজী কামরুজ্জামানের বাড়ির সামনে গেলে মুক্ত, শাহ আলম, সজীব ও মাহমুদসহ ১০-১২ জন তাঁকে গতিরোধ করে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় শাহ আলম হেলমেট দিয়ে তাঁকে মারতে থাকেন। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করেন।
এর কিছুক্ষণ পর শাহ আলমের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন গিয়ে তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও ভাবিকে মারধর করা হয়।
আমেনা আক্তার বলেন, ২০-২২ জন লোক এসে তাঁদের বাড়িতে হামলা করেন। এ সময় শাহ আলম, মুক্ত ও সজীব তাঁদের ঘরের দরজায় হামলা করে বলতে থাকেন, ‘সোমবারের মধ্যে মামলা তুলে না নিলে তোঁদেরকে মেরে ফেলব।’ এ সময় দরজার ফাঁক দিয়ে তিনি ওঁদের কর্মকাণ্ড ভিডিও করেন।
হামলার ঘটনা অস্বীকার করে মুক্ত মেম্বর বলেন, তাঁরা কোনো হামলা করেননি। তাঁর ভাইকে মেরে মতি মেম্বর চোখ নষ্ট করে দিয়েছেন। ভিডিওর বিষয়ে বলেন, ওটা আগের ভিডিও।
সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন বলেন, সালথা থানায় করা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গতকাল মামলার হাজিরা দিয়ে শাহ আলম, মুক্ত মেম্বরসহ কয়েকজন আসামি বাড়িতে ফেরার পথে মতি মেম্বরের সঙ্গে দেখা হলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির পরে শাহ আলম ও মুক্ত মেম্বর দলবল নিয়ে মতি মেম্বর ও তাঁর ভাই হায়াত আলী মাতুব্বরের বাড়ি হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।