লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ৫০ ওভার সংস্করণের ফাইনাল হয়েছে কাল পূর্বাঞ্চল-উত্তরাঞ্চলের মধ্যে। শিরোপার লড়াইয়ে নিজের দল মধ্যাঞ্চল না থাকায় কিছুটা আফসোস মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের। কী দুর্দান্ত এক টুর্নামেন্টই না গেল এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের।
আফিফ, নাইম, বিপ্লব, সাইফদের সঙ্গে ২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন অঙ্কন। বাংলাদেশ দলের হয়ে আফিফদের অভিষেক হলেও সেই স্বপ্ন পূরণের পথে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো খেলে যাচ্ছেন তিনি। বিসিএল ওয়ানডেতে ৩ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে সর্বোচ্চ ২৩৬ রান করে কাল হয়েছেন টুর্নামেন্টসেরা। তাঁর গড় চোখ কপালে ওঠার মতোই—২৩৬!
এর আগে বিসিএলের বড় দৈর্ঘ্যের সংস্করণেও ধারাবাহিক ছিলেন। ৪ ইনিংসে দুটি ফিফটিতে অঙ্কনের রান ১৬৫, গড় ৪১.২৫। লিস্ট ‘এ’ সংস্করণে দুটি সেঞ্চুরি থাকলেও জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) এ মৌসুমে প্রথম শ্রেণিতে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিভাগের হয়ে ৭ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিতে তাঁর ২৮৩ রান, গড় ৪৭.১৬। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও (ডিপিএল) অঙ্কন ছিলেন উজ্জ্বল। মোহামেডানের হয়ে ১৫ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে ৫৭৪ রান করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক রানের আলপনাই যেন এঁকে চলেছেন অঙ্কন। নিজের ধারাবাহিকতা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে তিনি বললেন, ‘মাঠের বাইরে নিজের কাজগুলো ঠিকঠাকভাবে করা, সব সময় করতে থাকা, এগুলোই চেষ্টা করি। কীভাবে ধারাবাহিক ভালো খেলা যায়, এসব নিয়ে চিন্তা করছি। সব সময় চেষ্টা করি নিজের খেলায় কী উন্নতি আনা যায়।’
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে উঠে আসা অঙ্কনের হাতেখড়ি ব্রাদার্স ইউনিয়ন একাডেমির কোচ ইমন দাসের হাত ধরে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এ বছর প্রথম সেঞ্চুরি পেলেও ৯০-এর ঘরে এর আগে বেশ কয়েকবারই আউট হয়েছেন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ও প্রথম শ্রেণির মিলিয়ে শেষ ১০ ইনিংসে ২ সেঞ্চুরি ও ৫ ফিফটি। ফিফটি পেরোনো ইনিংস সব ৬৫-এর ওপরে, ৯০ পেরিয়ে আউট হয়েছেন দুবার। প্রত্যাশা অনুযায়ী, সেঞ্চুরি না হওয়ায় আফসোসও ঝরছে তাঁর কণ্ঠে, ‘আক্ষেপ থেকে গেল। ৪ দিনের বিসিএলে ৯০ পেরোনো স্কোর করেছি; কিন্তু ১০০ করতে পারিনি। ৫০ ওভারেও ৯৫ করেছি ১০০ করতে পারিনি, এখনো উন্নতির অনেক কিছু বাকি।’
ঘরোয়া লিগে দারুণ কিছু করে জাতীয় দলের পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যই থাকে একজন ক্রিকেটারের। সেই স্বপ্ন বুনছেন অঙ্কনও, ‘কোনো বড় টুর্নামেন্টে আমার দলকে সহায়তা করতে পারি, অবদান রাখতে পারি, এটাই আমার লক্ষ্য। জাতীয় দলে যদি কখনো সুযোগ পাই, আমরা যেন বড় কোনো টুর্নামেন্ট জিততে পারি, এটাই হবে লক্ষ্য।’ এবার তাঁর লক্ষ্য, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে বিপিএল রাঙানো।